Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

গনির জেলায় পদ্ম ফুটবেই, দাবি দিলীপের

গনির জেলাতে ঘাসফুল না ফুটলেও, ফুটেছে পদ্ম ফুল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহের বৈষ্ণবনগরের মতো গনিখানের দুর্গে আরও পদ্মফুল ফুটবে বলে দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

দলীয় সভায় দিলীপ।  — নিজস্ব চিত্র

দলীয় সভায় দিলীপ। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০২:১৯
Share: Save:

গনির জেলাতে ঘাসফুল না ফুটলেও, ফুটেছে পদ্ম ফুল।

আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহের বৈষ্ণবনগরের মতো গনিখানের দুর্গে আরও পদ্মফুল ফুটবে বলে দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার বিকেলে বৈষ্ণবনগর স্কুল মাঠে দাঁড়িয়ে বিজেপির সংবর্ধনা সভায় কংগ্রেসের দুর্গ ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিলেন দিলীপবাবু। তিনি জানান, মালদহে আমাদের ভোট রয়েছে। এ বার বৈষ্ণবনগর থেকে আমাদের জয় শুরু হল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার সমস্ত প্রান্তেই ফুটবে পদ্মফুল। তিনি দাবি করলেন, ‘‘গনিখানের দুর্গ ভাঙতে কেবল বিজেপিই পারবে। আর বৈষ্ণবনগরের উন্নয়নই পথ দেখাবে জেলাকে।’’

বিজেপি সভাপতির দাবি, কংগ্রেস এখানে ক্ষমতায় থাকলেও এলাকার উন্নয়নের কোনও কাজ করেনি। এখানকার ভাঙন সমস্যা নিয়েও কোনও কাজ করেনি। এদিন ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেছেন তাঁকে। বিধানসভাতে এমনই বিষয়গুলি তুলে ধরা হবে। দিলীপবাবুর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা সমালোচনা করেছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) বলেন, ‘‘মালদহ জেলা কংগ্রেসের শক্ত মাটি। গনিখানের জেলা। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বৈষ্ণবনগরে বিজপি ও তৃণমূল গোপন আঁতাঁত করেছিল। এই গোপন আঁতাতের জবাব আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তাঁরা পেয়ে যাবেন।’’ যদিও গোপন আঁতাঁতের অভিযোগ একযোগে অস্বীকার করেছেন বিজেপি এবং তৃণমূল নেতৃত্বরা।

২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের বিশ্বনাথ ঘোষকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন কোতোয়ালি পরিবারের অন্যতম সদস্য কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী। এ বারের নির্বাচনে ইশাবাবু সুজাপুর বিধানসভা থেকে ভোটে লড়েন। ফলে ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছিলেন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ ডালুবাবুর ঘনিষ্ঠ আজিজুল হক। তাঁকে ৮ হাজার ৪৭০ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির স্বাধীন সরকার। জেলাতে এ বারই প্রথম বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। যার ফলে উচ্ছ্বসিত জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ দিন বিকেল চারটে থেকে বৈষ্ণবনগরের প্রমোদ দাস ভবনে বিজেপির বিধায়কদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক স্বাধীন সরকার ছাড়াও হাজির ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রকাশ্য সভাও হয়। এ দিন জলপাইগুড়ির মাদারিহাট থেকে ট্রেনে করে মালদহে আসেন তিনি। দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে বিশ্রাম নেওয়ার পর স্থানীয় বিধায়ক স্বাধীন বাবুকে সঙ্গে নিয়ে বৈষ্ণবনগরের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দিলীপবাবু বৈষ্ণবনগরের বিননগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙন কবলিত এলাকা চিনা বাজার, সরকার টোলা, দুর্গারাম টোলা পরিদর্শন করেন। গঙ্গা নদীর কবলে বিগত বর্ষায় শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে চলে গিয়েছিল। এখানে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বর্ষা আসলেই ভাঙনের কাজ শুরু হয়। শুখা মরসুমে কাজ শুরুর দাবিতে আমরা আগামী দিনে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করব।’’ এরপরে সংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে আসার আগে সাংবাদিকদের কাছে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প কেউ নেই। ব্যক্তিগত নেতৃত্বে লড়েছেন তিনি। মানুষের মনে হয়েছে, তিনিই ক্ষমতায় থাক, তাই তাঁকে রেখেছেন। তবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’’ মানুষের স্বার্থে সব বিরোধী দল এক সঙ্গে জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করার ডাক দিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি বুথে কমিটি গঠন সহ এখন থেকেই কর্মীদের নিয়ে জেলা নেতাদের বৈঠক করার কথা বলেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে আগামী জুলাই মাসে রাজ্যের ৫০ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পঞ্চায়েতের সমস্ত খুঁটিনাটি তাঁদের বোঝানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dilip ghosh BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE