Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
হতে চান না পরিষদীয় দলনেতা

রাজ্য সভাপতি পদই পছন্দ দিলীপের

বিজেপি-র সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী, এক ব্যক্তির এক পদ হওয়ার কথা। সেই রীতি অনুসারে বিধানসভায় পরিষদীয় দলের নেতা হলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে হবে দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিলীপবাবু বুঝিয়ে দিলেন, তিনি পরিষদীয় দলনেতা হতে চান না। রাজ্য সভাপতির পদেই থাকতে চান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৬ ০৩:৩৯
Share: Save:

বিজেপি-র সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী, এক ব্যক্তির এক পদ হওয়ার কথা। সেই রীতি অনুসারে বিধানসভায় পরিষদীয় দলের নেতা হলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে হবে দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিলীপবাবু বুঝিয়ে দিলেন, তিনি পরিষদীয় দলনেতা হতে চান না। রাজ্য সভাপতির পদেই থাকতে চান।

দিলীপবাবু-সহ তিন বিজেপি প্রার্থী যে-ই বিধানসভা ভোটে জিতেছেন, তখন থেকেই দলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে, তা হলে এ বার দিলীপবাবু নিশ্চয়ই বিধানসভায় পরিষদীয় দলের নেতা হয়ে

যাবেন। সে ক্ষেত্রে দলের এক ব্যক্তি, এক পদ রীতি অনুসারে তাঁর আর দলের রাজ্য সভাপতির পদে থাকা হবে না। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শুক্রবার দিলীপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘কে বলেছে, আমাদের এখনই পরিষদীয় দলনেতা ঠিক করে ফেলতে হবে? কলকাতা পুরসভায় তো আমরা অনেক দিন দলনেতা ছাড়াই কাজ চালিয়েছি। বিধানসভাতেও এক-দু’বছর দলনেতা ঠিক না করে চালিয়ে যেতে পারি।’’

তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আবার আমি ছাড়া অন্য দুই বিধায়কের মধ্য থেকেও কেউ পরিষদীয় দলনেতা হতে পারেন।’’ দিলীপবাবুর এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, তিনি রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে মোটেই আগ্রহী নন। এ বার বিধানসভা ভোটেই বিজেপি এ রাজ্যে প্রথম পূর্ণ মেয়াদের তিন জন বিধায়ক পেয়েছে। খড়্গপুর সদর থেকে জিতেছেন দিলীপবাবু। মাদারিহাট থেকে মনোজ টিগ্গা এবং বৈষ্ণবনগর থেকে স্বাধীন সরকার জয়ী হয়েছেন। সেই কারণেই দিলীপবাবুর পরিষদীয় দলনেতা হওয়ার প্রসঙ্গ আলোচিত হচ্ছে বিজেপি-তে।

তবে দিলীপবাবু যা-ই বলুন, তাঁর দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বীরা কিন্তু রাজ্য সভাপতি পদ থেকে নজর সরাচ্ছেন না। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর রাহুল সিংহকে সরিয়ে দিলীপবাবুকেই পদে বসিয়েছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সাধারণত আরএসএসের কোনও প্রচারককে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় না। সঙ্ঘ থেকে বিজেপি-তে আসার এক বছরের মধ্যেই রাজ্য সভাপতি হয়ে যাওয়ার নজিরও বেশি নেই। কিন্তু দিলীপবাবুর ক্ষেত্রে এই সব প্রথাই ভেঙেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর মধ্য দিয়ে সঙ্ঘের আধিপত্য জোরালো হয়েছে বিজেপি-তে। এখন দিলীপবাবুর পরিষদীয় দলনেতা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই দলের একাংশ রাহুলবাবুকে ফের

রাজ্য সভাপতি করার কথা ভাবতে শুরু করেছে।

রাহুলবাবুও কেন্দ্রীয় সম্পাদক হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দিল্লির তুলনায় রাজ্য দফতরেই বেশি সময় দেন। কিন্তু দলেরই একাংশের বক্তব্য, রাহুলবাবু মাত্র ৫ মাস আগে কেন্দ্রীয় সম্পাদক হয়েছেন। এখনই ফের তাঁকে রাজ্য সভাপতি করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিশেষত, প্রথম বার ভোটে লড়েই দিলীপবাবু যখন জিতেছেন, তখন বহু বার এবং এ বারও ভোটে পরাজিত রাহুলবাবু দলে কিছুটা কোণঠাসাই হয়ে রয়েছেন। শমীক ভট্টাচার্য, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়— রাজ্য সভাপতি পদের জন্য এঁদের নাম নিয়েও দলের অন্দরে চর্চা হচ্ছে।

সম্প্রতি একাধিক বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এবং উপাচার্যকে কটূক্তি করে দলের ভিতরে-বাইরে সমালোচিত হয়েছেন দিলীপবাবু। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের কাছে তাঁর নামে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ জমা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিলীপবাবুকে পরিষদীয় দলনেতা করে রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে বলেও বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dilip ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE