সকাল থেকেই গোটা পাড়া কেমন যেন থমথমে। রাস্তার মোড়ে-মোড়ে টাঙানো ব্যানারে পাড়ার ছেলের ছবি। ঘোষ বাড়ির মাঠে, সাদা কাপড়ে বাঁধা ম্যারাপের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিবেশী থেকে পরিজনেরা।
যাঁর জন্য এত আয়োজন, তিনি এলেন সকাল ৮টা নাগাদ। প্রতি বছরই কোনও না কোনও পর্বত-শিখর ছুঁয়ে তিনি আসেন, রাস্তার দু’ধারে দাঁড়ানো মানুষ তাঁর গাড়ির উপরে ফুল ছোড়ে। আর তিনি গাড়ির কাচ নামিয়ে হাত নাড়েন। পরে সকলের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেন। কিন্তু বুধবার সকালের থমথমে পরিবেশটাই বলে দিচ্ছিল, এ বারটা একেবারে অন্য রকম। মাকালু (৮,৪৬৩ মিটার) শৃঙ্গ জয় করলেও এ বার বালির বাসিন্দা দীপঙ্কর ঘোষ ফিরলেন ফুলে ঢাকা শববাহী গাড়িতে কফিনবন্দি হয়ে।
এ দিন সকাল থেকে বাড়ির পিছন দিকের মাঠে, ম্যারাপের নীচে প্রায় তিন ঘণ্টা রাখা হয়েছিল সেই কফিন। সেখানেই ‘গুরু কৃপা হি কেবলম্’ গান গেয়ে দীপঙ্করকে শ্রদ্ধা জানালেন আত্মীয়, পরিজন থেকে বন্ধু ও প্রতিবেশীরা। সকাল ১১টা নাগাদ কফিন নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির ভিতরে। প্রতিটি অভিযানের পরে ফিরে যে বারান্দায় প্রথম পা রাখতেন দীপঙ্কর, সেখানেই এ দিন তাঁকে শায়িত রাখা হয়। তুষারঝড়ে হারিয়ে গিয়ে মৃত ভাইয়ের মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন জেঠতুতো দাদা শান্তনু। স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘‘আর তো বলবি না ফ্লাস্কে চা আছে, আর করতে হবে না।’’