আগামী দু’সপ্তাহ কোনও গাছ কাটা যাবে না লাটাগুড়িতে। বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ গাছ কাটার উপর দু’সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করেন।
এ দিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকার এবং জাতীয় হাইওয়ে কর্তৃপক্ষকেও মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। ওই এলাকায় প্রশাসন যে নির্বিচারে গাছ কেটেছে তাও কার্যত মেনে নিয়েছে আদালত।
উড়ালপুল তৈরির জন্য লাটাগুড়িতে গাছ কাটার কথা জানিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, খাতায়কলমে যে ক’টি গাছ কাটার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার থেকে অনেক বেশি গাছ কাটা হয়েছে। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে ওই এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন তাঁরা। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ গাছ কাটার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলাটি জাতীয় পরিবেশ আদালতে পাঠিয়ে দেয়।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইনি অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের সংগঠন ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ও এই মামলায় যুক্ত হচ্ছে। গাছ কাটা নিয়ে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল এবং জলপাইগুড়ির জেলাশাসককে নোটিসও পাঠিয়েছেন তাঁরা। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘এই গাছ কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং বনসুরক্ষা আইনের তোয়াক্কা করা হয়নি।’’
পরিবেশ আদালতের নির্দেশে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডের দাবি, এ দিন সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, প্রকল্পটি কেন্দ্রের৷ তারা শুধু গাছ কাটতে সাহায্যে করছেন৷ তা ছাড়া যে জায়গায় গাছ কাটা হচ্ছে সেটা পুর্ত দফতরের জমি হওয়ায় বনভূমি সংরক্ষণ আইনের আওতায় পড়বে না৷ কিন্তু পরিবেশকর্মীদের পক্ষের আইনজীবী তার বিরোধিতা করেন৷ শ্যামাপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘ট্রাইব্যুনালও জানায়, এটা বন সুরক্ষা আইনের আওতায় পড়বে৷ এবং কেন্দ্রকে মামলায় পার্টি করতে বলেছে ট্রাইব্যুনাল৷ যত দিন তা না হচ্ছে গাছ কাটার ওপর স্থগিতাদেশ থাকবে৷’’