Advertisement
E-Paper

‘পঞ্চায়েতের মাথায় কোনও দাগীকে বসাবেন না’! জেলা সংগঠনের নেতাদের নির্দেশ পাঠালেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব

গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ গঠন নিয়ে এ বার ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করছে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পৃথক ভাবে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, পঞ্চায়েত গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় মনোভাবের কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৩৪
Mamata Banerjee

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েতের মাথায় কোনও দাগী অপরাধীকে বসানো যাবে না। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করা নিয়ে জেলা নেতৃত্বকে এমনই নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী ১৬ অগস্টের মধ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই বোর্ড গঠন করার নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভার বাদল অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় বিধায়কদের। লোকসভা ভোটের আগে দলীয় নেতৃত্বের ভাবমূর্তি ফেরাতে এ বার পঞ্চায়েত স্তর থেকেই উদ্যোগী হচ্ছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ গঠন নিয়ে এ বার ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করতে চাইছে তারা। আলাদা করে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকও করা হচ্ছে।

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে জেলা নেতৃত্বকে পদাধিকারি চয়নের ক্ষেত্রে সাবধানী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া, পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে দল বিড়ম্বনায় পড়ুক এমন কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ভাবে এলাকায় দাগী বলে পরিচিত কাউকে কোনও পঞ্চায়েতের মাথায় বসানো যাবে না।

জেলা পরিষদ গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নামের তালিকা পাঠিয়ে সুপারিশ করতে হবে জেলা নেতৃত্বকে। ওই নামের মধ্যেই সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি এবং কর্মাধক্ষ্যদের বেছে নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। তবে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত গঠনের ক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা সভাপতি, ব্লক সভাপতি, এলাকার বিধায়ক ও নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের উপরে। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে সভাপতি, সহ-সভাপতি ও কর্মাধক্ষ্যদের মনোনীত করতে হবে দলের ঠিক করে দেওয়া নিয়ম মেনে। সে ক্ষেত্রে বৈঠকে বসে জেলা সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বিধায়ক ও পঞ্চায়েত সমিতিতে শাসকদলের প্রতীকে নির্বাচিত সদস্যরাই বসে পদাধিকারিদের নাম ঠিক করবেন।

গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান মনোনয়নের ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকবেন জেলা সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বিধায়ক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিতেরা। তবে উভয় ক্ষেত্রেই এলাকায় দুর্নাম থাকা কোনও ব্যক্তিকে পঞ্চায়েতের মাথায় বসানো যাবে না। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক বিধায়ক বলেন, ‘‘দল কোনও দাগী অপরাধী ব্যক্তির দায় নিতে রাজি নয়। তাই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে আগাম সর্তকতার বাণী শুনিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ বার দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই আমাদের পঞ্চায়েত গঠন করতে হবে।’’

শনিবার থেকে তৃণমূল ভবনে পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ নিচুতলা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলা নেতৃত্বকে তাঁদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে শনিবার। নির্দেশ আমান্য করলে যে রাজ্য নেতৃত্ব পাল্টা ব্যবস্থা নেবে, সে বার্তাও শীর্ষ নেতৃত্ব জেলার নেতাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন।

তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারও দুর্নীতির দায় দল নেবে না।’’ সেই নীতি মেনেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রথমসারির তৃণমূল নেতাকেও রেয়াত করেনি দল। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও জীবনকৃষ্ণ সাহার ক্ষেত্রে ততটা কঠিন না হলেও, দুর্নীতি অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ওই দুই নেতাকেও নিজেদের লড়াই নিজেদেরই করতে হচ্ছে। এ বার ‘দুর্নীতির দাগ’ থাকা কোনও নেতাকে পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।

২৩টি জেলা পরিষদ ছাড়াও ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৩,৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তার সিংহভাগই জিতেছে তৃণমূল। এ বার সেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠনের ক্ষেত্রে সাবধানী পদক্ষেপ করছে শাসকদল।

Mamata Banerjee Panchayat Election 2023 TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy