Advertisement
E-Paper

বেষ্টনীর বাইরেই নবমীর জনস্রোত

দুর্গাপুরের মতো মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রম ছাড়া উত্তর থেকে দক্ষিণ— দুই বঙ্গের মণ্ডপেই ভিড়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২০ ০২:১৪
বালুরঘাটের একটি পুজো মণ্ডপে নবমীর সন্ধ্যার ভিড়। নিজস্ব চিত্র

বালুরঘাটের একটি পুজো মণ্ডপে নবমীর সন্ধ্যার ভিড়। নিজস্ব চিত্র

ন্যায়ালয়ের নির্দেশ মেনে মণ্ডপের নির্দিষ্ট দূরত্বে বেষ্টনী ছিল। নজরদারি ছিল পুলিশের। সতর্কতার প্রচারও ছিল নিরন্তর। তবু নবমী নিশিতে ভিড় ঠেকানো গেল না। আবার অপেক্ষা তো সেই এক বছরের। অতিমারির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তাই অনেকেই বেরিয়ে পড়েন মাতৃদর্শনে। কলকাতার অধিকাংশ পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, সপ্তমী-অষ্টমীর থেকে নবমীতে ভিড় হয়েছে অনেক বেশি। দুর্গাপুরের মতো মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রম ছাড়া উত্তর থেকে দক্ষিণ— দুই বঙ্গের মণ্ডপেই ভিড়। কোথাও কোথাও জমজমাট মেলাও।

নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের কর্মকর্তা অঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমাদের মণ্ডপে ভিড় হচ্ছে ভালই।’’ কলেজ স্কোয়ার পুজো কমিটির কর্তা বিকাশ মজুমদার জানান, তাঁদের মণ্ডপে ১০ মিটার দূর থেকে প্রতিমা দেখা সম্ভব নয়। তাই ভরসা এলইডি স্ক্রিন। মাস্ক পরা, ১০ মিটার দূর থেকে প্রতিমা দর্শন-সহ স্বাস্থ্যবিধির সব খুঁটিনাটি মেনে চলার উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে পুজো কমিটিগুলির দাবি। লালবাজার জানায়, মাস্ক ছাড়া কাউকে মণ্ডপ-চত্বরে ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। সুরুচি সঙ্ঘের এক কর্তা জানান, সব গেটে দর্শকদের হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা আছে। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের দাবি, মাস্কহীন সব দর্শককেই মাস্ক দেওয়া হয়েছে। তবে রাত যত বেড়েছে, ভিড়ে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা যায়নি। মাস্ক হটিয়ে নিজস্বী তুলতেও দেখা গিয়েছে অনেককে।

গাড়ি ভাড়া করে ব্যারাকপুর থেকে সপরিবার বেরিয়ে পড়া অজয় মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘অষ্টমী পর্যন্ত বাড়িতে থেকে হাঁসফাঁস লাগছিল। এক-একটা মণ্ডপ ঘুরছি আর হাত স্যানিটাইজ় করে নিচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে কমবয়সিদের স্রোত নবমীতেও

বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা, আন্দুল, উদয়নারায়ণপুরে ভালই ভিড় ছিল মণ্ডপের সামনে। পুলিশের বক্তব্য, ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়েছে। মাস্ক দেওয়া হয়েছে অনেক দর্শককে।

অষ্টমীর রাতে খোলা মঞ্চে নাচের আসর বসানোয় বনগাঁর মাঝেরপাড়া সহযাত্রী ক্লাবের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নবমীর সন্ধ্যা থেকে ভিড় হয় বনগাঁর মণ্ডপগুলিতে। পুলিশের বক্তব্য, কোথাও জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়নি। কোনও কোনও পুজো কমিটি দর্শকদের মণ্ডপে ঢুকতে দিয়েছে। বনগাঁর একটি মণ্ডপ থেকে প্রতিমা দেখে বেরিয়ে ঋজা বিশ্বাস বললেন, ‘‘একটা দিন কিছুটা ছাড় দিয়েছে পুজো কমিটি। তাদের ধন্যবাদ। দূরত্ব-বিধি বজায় রেখেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।’’

ক্যানিংয়ের বেশির ভাগ মণ্ডপ তিন দিক খোলা। প্রচুর ভিড়। দূরত্ব-বিধি শিকেয়। ‘নো এন্ট্রি বোর্ড’-ও নেই। তবে প্রতিমার সামনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। বাহিরসোনা মোড়ে পল্লিমঙ্গল সমিতির মণ্ডপের বাইরে মেলায় ভিড় ছিল ভালই।

আরও পড়ুন: রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ল সংক্রমণের হার, প্রতিমা নিরঞ্জন ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ

শিলিগুড়িতে দুপুর থেকেই রাস্তায় জনস্রোত। দুপুর থেকে যান নিয়ন্ত্রণে নামে পুলিশ। মালদহে সন্ধ্যার আগে থেকেই রাস্তার দখল নেন দর্শকেরা। দূরত্ব-বিধি মানতে দেখা যায়নি।

অনেকের মাস্কও ছিল না। বালুরঘাটের তিনটি বড় পুজোর মণ্ডপে জনসমাগম যথেষ্ট। বৃষ্টির জন্য কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে তেমন ভিড় ছিল না। মুর্শিদাবাদে মণ্ডপের বাইরে ভিড় সামলাতে পুলিশ নাকাল।

সকাল থেকে বর্ধমান ও কালনা শহরে অনেকেই মাস্ক ছাড়া বেরিয়ে পড়েন। দুর্গাপুরে অবশ্য রাস্তা থেকে মণ্ডপ— নিরিবিলিতেই কেটেছে মহানবমী। পুরুলিয়ার কাশীপুরের পঞ্চকোট রাজবাড়ির নবমীর পুজো ঘিরে প্রচুর ভিড়। বেশ ভিড় পুরুলিয়া শহরে রেস্তরাঁয়। সন্ধ্যায় বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরের মণ্ডপে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও পথে প্রচুর লোক।

মেদিনীপুর শহরের মণ্ডপগুলিতে ভিড় বিকেল থেকেই। বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান পাওয়া গোয়ালতোড়ের আমলাশুলির মণ্ডপেও ভিড়। খড়্গপুরে তালবাগিচা, সুভাষপল্লি, গোলবাজারে পুজোকে ঘিরে মেলা। ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দিরে মানুষের ঢল। মন্দির উন্নয়ন কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি সমীর ধল জানান, নবমীতে অন্তত ৪০ হাজার দর্শক এসেছিলেন। ভিড় হয়নি পাঁশকুড়া-কোলাঘাটের অনেক মণ্ডপে। ভিড় নেই হুগলিতেও। চন্দননগর, চুঁচুড়ার অলিগলি ফাঁকাই ছিল। রাতে ভিড় বাড়ে শ্রীরামপুরে।

Durga Puja 2020 Coronavirus in West Bengal COVID-19 Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy