Advertisement
E-Paper

শুভার চ্যানেলের সরঞ্জামের হদিস ছাদের গুদামঘরে

এগারোতলার ছাদে গুদামঘর। সেখানে ঢুকে চমকে গেলেন কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসারেরা। থরে থরে রাখা দামি কম্পিউটার, ক্যামেরা ইত্যাদি। বৈদ্যুতিন চ্যানেল চালানোর হরেক সরঞ্জাম। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার জিনিসপত্র। ঘটনাস্থল: মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের চালু না-হওয়া টিভি চ্যানেল ‘এখন সময়’-এর অফিসবাড়ির ছাদ। চ্যানেলের গোটা কোম্পানিটাই শুভাপ্রসন্নর কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০৬
সল্টলেকে আবাসনের ছাদের ঘরে মঙ্গলবার ইডি-র তল্লাশি। মিলল দেবকৃপার চ্যানেলের সরঞ্জাম। ছবি:শৌভিক দে

সল্টলেকে আবাসনের ছাদের ঘরে মঙ্গলবার ইডি-র তল্লাশি। মিলল দেবকৃপার চ্যানেলের সরঞ্জাম। ছবি:শৌভিক দে

এগারোতলার ছাদে গুদামঘর। সেখানে ঢুকে চমকে গেলেন কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসারেরা। থরে থরে রাখা দামি কম্পিউটার, ক্যামেরা ইত্যাদি। বৈদ্যুতিন চ্যানেল চালানোর হরেক সরঞ্জাম। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার জিনিসপত্র।

ঘটনাস্থল: মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের চালু না-হওয়া টিভি চ্যানেল ‘এখন সময়’-এর অফিসবাড়ির ছাদ। চ্যানেলের গোটা কোম্পানিটাই শুভাপ্রসন্নর কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন।

দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানাধীন চ্যানেলটির লিখিত-পড়িত ঠিকানা হল সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের ডিএন-১৪, বিষ্ণু টাওয়ার। নথি অনুযায়ী, বাড়িটির দশতলায় তার অফিস। কিন্তু মঙ্গলবার সে ঠিকানায় হানা দিয়ে ইডি দেখে, সেখানে রয়েছে এক সফট্ওয়্যার কোম্পানি। জানা যায়, মাস চারেক আগে বিষ্ণু টাওয়ার কর্তৃপক্ষের থেকে জায়গাটা তারা ভাড়া নিয়েছে।

তা হলে ‘এখন সময়’-এর জিনিসপত্র কোথায় গেল?

বিষ্ণু টাওয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইডি’র তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ছাদের এক গুদামে চ্যানেলের মালপত্র রাখা রয়েছে। গুদামঘরের দরজার তালা খোলানো হয়। ইডি’র এক কর্তা জানাচ্ছেন, ওখানে ৪-৬ কোটি টাকার সরঞ্জাম রাখা ছিল। সে সব বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এক বছর তদন্ত চালিয়েও রাজ্য পুলিশের ‘সিট’ কেন এর হদিস পায়নি, ইডি এখন সেই প্রশ্ন তুলছে। তাদের এ-ও প্রশ্ন, কী ভাবে অত মালপত্র অফিস থেকে গুদামে সরানো হল? কারা অনুমতি দিলেন? সুপ্রিম কোর্টে সারদা-মামলার অন্যতম আবেদনকারী অমিতাভ মজুমদারের কথায়, “আমরা আগেই দাবি জানিয়েছিলাম, ওই সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক। না-করাটা অপরাধের সামিল। রাজ্য পুলিশ আসলে ব্যাপারটা চেপে যেতে চেয়েছিল।”

অভিযোগ: ‘প্রভাবশালী’দের চাপে পড়েই ২০১২-য় কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ‘এখন সময়’ কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন সুদীপ্ত। শুভাপ্রসন্নবাবু অবশ্য অন্যতম ডিরেক্টর হিসেবে থেকে যান। চ্যানেলটি আর চালু হয়নি। সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন অর্পিতা ঘোষ, যিনি এখন তৃণমূলের সাংসদ। চ্যানেল থেকে বেতন না-পাওয়ার প্রথম অভিযোগটি তিনিই দাখিল করেছিলেন। তারই ভিত্তিতেই কাশ্মীর থেকে সুদীপ্ত ও তাঁর ‘ছায়াসঙ্গিনী’ দেবযানীকে গ্রেফতার করে আনা হয়।

দেবকৃপা ঠিক কত টাকায় বিক্রি হয়েছিল, তা নিয়ে ইডি তদন্ত করছে। সিবিআই-ও তদন্তে নেমেছে। ইডি ক’দিন আগে শুভাপ্রসন্ন ও তাঁর স্ত্রী শিপ্রা ভট্টাচার্যকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। দেবকৃপার আয়-ব্যয় সহ বিভিন্ন নথিও শুভাপ্রসন্নর কাছে চাওয়া হয়। এ দিন ছিল তথ্য জমা দেওয়ার শেষ দিন। এ দিন সকালে শুভাপ্রসন্নর এক প্রতিনিধি ইডি অফিসে গিয়ে কিছু তথ্য জমা দেন। তার পরেই তাঁকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তকারীরা হানা দেন বিষ্ণু টাওয়ারে।

এ দিকে, সুদীপ্ত সেন তাঁর কোনও পাসপোর্ট ছিল না বলে বারবার দাবি করলেও তাঁর নামে একটি পাসপোর্টের অস্তিত্ব ইডি’র নজরে এসেছে। ইডি-সূত্রের খবর: দিন কয়েক আগে একটি তথ্যের সঙ্গে সুদীপ্তর পাসপোর্টের একটি প্রতিলিপি তাদের হাতে আসে। তদন্তকারীদের ধারণা, কোথাও নিজের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার সময়ে পাসপোর্টের প্রতিলিপিও জমা দেন সুদীপ্ত। পাসপোর্টটির নম্বর দিয়ে অভিবাসন দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, সেটি নিয়ে সুদীপ্ত বিদেশে গিয়েছিলেন কি না। প্রসঙ্গত সুদীপ্তের পরিজনেরাও দাবি করেছেন, বিমান-যাত্রা শরীরে সয় না বলেই সারদা-কর্তা কখনও বিদেশে যাননি।

subhaprasanna saradha scam sudipto sen debkripa cbi latest news online new
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy