Advertisement
E-Paper

১৫০০ কোটি পাচার মালয়েশিয়ায়, দাবি ইডি-র

রোজ ভ্যালি-কর্তা গৌতম কুণ্ডু অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা অবৈধ ভাবে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন বলে আদালতে দাবি করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আইনজীবীরা। বিদেশে টাকা পাচার এবং তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে বুধবার রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে গ্রেফতার করে ইডি। বৃহস্পতিবার তাঁকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। এ দিন বিচারকের কাছে ইডি-র আইনজীবীদের অভিযোগ, চড়া হারে সুদ-সহ টাকা ফেরতের প্রলোভন দেখিয়ে বাজার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা তুলেছে রোজ ভ্যালি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৫
বৃহস্পতিবার বিধাননগর থানা থেকে আদালতে আনার সময় গৌতম কুণ্ডুর উদ্দেশে ফুল ছুড়লেন তাঁর অনুগামীরা। ছবি: শৌভিক দে।

বৃহস্পতিবার বিধাননগর থানা থেকে আদালতে আনার সময় গৌতম কুণ্ডুর উদ্দেশে ফুল ছুড়লেন তাঁর অনুগামীরা। ছবি: শৌভিক দে।

রোজ ভ্যালি-কর্তা গৌতম কুণ্ডু অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা অবৈধ ভাবে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন বলে আদালতে দাবি করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আইনজীবীরা।

বিদেশে টাকা পাচার এবং তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে বুধবার রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে গ্রেফতার করে ইডি। বৃহস্পতিবার তাঁকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। এ দিন বিচারকের কাছে ইডি-র আইনজীবীদের অভিযোগ, চড়া হারে সুদ-সহ টাকা ফেরতের প্রলোভন দেখিয়ে বাজার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা তুলেছে রোজ ভ্যালি। ইডি-র দাবি, তাদের ব্যবসার পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা।

আদালতে ইডি এ দিন জানায়, কী ভাবে এবং কার কার প্রভাব খাটিয়ে বাজার থেকে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা হয়েছে, কী ভাবে তা পাচার হয়েছে এ সব জানতে আরও তদন্ত প্রয়োজন। তাই অভিযুক্ত গৌতম কুণ্ডুকে ইডি-র হেফাজতে রাখা দরকার। ইডি-র দাবি মেনে মুখ্য বিচারক মহম্মদ মুমতাজ খান আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত রোজ ভ্যালি-কর্তাকে ইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ দিন ইডি-র আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ ভদ্র আদালতে অভিযোগ করেন, রোজভ্যালি ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সিকিওরিটিজ এক্সচেঞ্জ বোর্ড (সেবি)-র অনুমতি না নিয়ে প্রায় ১৩ কোটি টাকা তুলেছে। ইডি-র আইনজীবীদের অভিযোগ, টাকা তোলার সময় ‘ডিবেঞ্চার’ শব্দটি ইচ্ছাকৃত ভাবে ব্যবহার করে কমবেশি তিন হাজার লগ্নিকারীকে কার্যত বোকা বানিয়ে ওই টাকা তোলা হয়েছে।

আদালতে ইডি-র দাবি, লগ্নিকারীদের অনেকেই লিখিত অভিযোগ করেছেন, চড়া হারে সুদ-সহ টাকা ফেরতের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল তাঁদের। আইনজীবীরা আদালতে জানান, ইডি-র তদন্তকারীদের কাছে বিবৃতি দেওয়ার জন্য অভিযোগকারীদের হুমকি দিচ্ছে রোজভ্যালির লোকজন।

আদালতে ইডি-র অভিযোগ, জনসাধারণের কাছ থেকে যে টাকা রোজ ভ্যালির দু’টি সংস্থা তুলেছে, তার সঙ্গে ওই সংস্থা দু’টির আয়-ব্যয়ের হিসাবের কোনও মিল নেই। বরং ওই হিসাব অনুযায়ী, ওই সংস্থার কার্যত কোনও রোজগার নেই বলেই দাবি করেছেন ইডি-র আইনজীবীরা। জনসাধারণের রাখা টাকা কোনও ভাবেই ফেরত দেওয়া যাবে না জেনেও রোজ ভ্যালি এখনও বাজার থেকে টাকা তুলছে বলে ইডি-র অভিযোগ।

আদালতে ইডি-র আরও অভিযোগ, বাজার থেকে তোলা টাকা অন্যত্র বিনিয়োগ করা ছাড়াও, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কিনেছে রোজ ভ্যালি সংস্থা। যে টাকা অবৈধ ভাবে সরানো হয়েছে, সেই টাকার হদিস জানেন সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। সে জন্য তাঁকে আরও জেরা করা দরকার বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

ইডি-র আইনজীবীরা এ দিন আদালতে জানান, গৌতমকে যাবতীয় নথিপত্র জমা দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সহযোগিতা না করে তদন্তকারীদের বিপথে চালিত করেছেন।

এ দিন আদালতে কলকাতা হাইকোর্টের ও সেবি-র ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ দাখিল করে গৌতমের জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবীরা। গৌতমের আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় ও সঞ্জয় দাশগুপ্ত দাবি করেন, হাইকোর্ট ইডি-কে নির্দেশ দিয়েছে, রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে তারা তদন্ত করতে পারে। কিন্তু হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সংস্থার কর্ণধারকে তারা গ্রেফতার করতে পারবে না। ধৃতের আইনজীবীরা এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, গ্রেফতারির সময় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো কোনও সাক্ষী রাখেনি ইডি। এমনকী ধৃতের পরিজনকেও গ্রেফতারির খবর দেওয়া হয়নি।

ইডি-র আইনজীবীরা পাল্টা জানান, রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত বজায় থাকলেও সংস্থার চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা যাবে না, এমন কথা হাইকোর্ট নির্দিষ্ট করে বলেনি। তা ছাড়া, মনি লন্ডারিং (অবৈধ ভাবে টাকা পাচার) আইনের ১৯ নম্বর ধারা মেনে গৌতমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা জানান, গ্রেফতারির উপর স্থিতাবস্থা জারির কোনও নির্দেশও উচ্চ আদালত থেকে নেননি সংস্থার কর্ণধার। ইডি-র দাবি, জনস্বার্থেই রোজ ভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু হয়েছে। তাই কোনও অবস্থাতেই আদালত যেন ধৃতকে জামিন না দেয়।

এ দিন গৌতম কুণ্ডুর আইনজীবী কিশোর দত্ত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়ে জানান, হাইকোর্ট রোজ ভ্যালির কর্ণধারকে গ্রেফতার করতে বারণ করলেও ইডি মানেনি। সে জন্য তিনি একটি আবেদন করতে চান। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই আবেদন করার কোনও জরুরি ভিত্তি নেই। তিনি পরে সময় মতো আবেদন করতে পারেন।

Rose Valley ED Goutam Kundu Money market Court police abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy