—প্রতীকী ছবি।
সন্দেশখালি থেকে ‘লাইভ’ খবর করার সময়ে একটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক সন্তু পানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ শুরু হল নানা মহলে। ‘এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া’ ওই সাংবাদিককে গ্রেফতারের নিন্দা করেছে। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। সওয়াল করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষেও।
সন্তুকে মঙ্গলবার বসিরহাট আদালতে তোলা হয়েছিল। পুলিশ ১০ দিনের হেফাজত চেয়েছিল। তবে আদালত সন্তুকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে সন্তুর বিরুদ্ধে ছবি তুলে যৌন নিগ্রহ, অবৈধ প্রবেশ-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহিলা এ দিন আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। সন্তু যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গিল্ড বিবৃতি দিয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় সাংবাদিকের গ্রেফতারকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেছে। ধৃত সাংবাদিকের প্রতি যাতে কোনও রকম অবিচার না হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য প্রশাসনের কাছে আর্জিও জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সরকারকে যা-যা করণীয়, সবই করতে হবে।’ কলকাতা প্রেস ক্লাবের বিবৃতিতেও প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে সন্তুর মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, সন্তুর বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, তা তদন্ত সাপেক্ষ।
ঘটনাটি পুরো সংবাদমাধ্যমকে চুপ করিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কলকাতা প্রেস ক্লাবেই এ দিন তাঁর অভিযোগ, “বাকি সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে এই পদক্ষেপ। যাতে তাঁরা সবাই চুপ করে যান, সে জন্যই এই ঘটনা।” শুধু বিবৃতি দেওয়ার বাইরে বেরিয়ে প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাওয়া বা সক্রিয় প্রতিবাদের মতো পদক্ষেপ করলেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “যে ভাবে সন্তু পানকে কর্মরত অবস্থায় ঘৃণ্য ভাবে, জবরদস্তি করে, জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেটা শুধু সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ নয়। গণতন্ত্রকে ধ্বংসের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার!” সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেছেন এসইউসিআই-এর রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্যও। তাঁর সংযোজন, “সন্দেশখালিতে শাসক দলের দুষ্কৃতীদের প্রত্যক্ষ মদতে নারী নির্যাতন, সাধারণ মানুষের সম্পত্তি লুট প্রভৃতি যা-যা ঘটছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সেই খবর করার কাজে যুক্ত সাংবাদিকের উপরে আক্রমণ ও গ্রেফতারের ঘটনা কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না।”
যদিও বিতর্কের মুখেও পুলিশের পদক্ষেপকে সমর্থন করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কারও অভিযোগ পেয়ে প্রশাসনের যা করার, তা-ই করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy