রাজ্যপালের আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা শুনে কেঁদে ফেললেন প্রতিবন্ধী ছাত্রী রিঙ্কি সেন। পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বারাসতে সুদীপ ঘোষের তোলা ছবি।
গত আট বছরে বিতর্ক কম হয়নি। কখনও দুর্নীতির অভিযোগে, কখনও ফলপ্রকাশ ঘিরে। শনিবার বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানেরও পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। রবীন্দ্রভবনের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী উপস্থিত থাকলেও এলেন না শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সমাবর্তনের মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট আসন রাখা ছিল। তিনি পথে রয়েছেন, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন — ছিল এমন ঘোষণাও। এমনকী, তাঁর লিখিত ভাষণও আগাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল সাংবাদিকদের হাতে। তবুও শেষ পর্যন্ত আসেননি পার্থবাবু।
দিনভর এই নিয়েই চলল জল্পনা। আমন্ত্রিত হয়েও কেন এলেন না শিক্ষামন্ত্রী? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরীর জবাব, ‘‘হয়তো তিনি এর চেয়েও বড় কোনও কাজে আটকে গিয়েছেন। তাই আসতে পারেননি।’’ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য জানতে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উপাচার্য যা-ই যুক্তি দিন, শিক্ষামন্ত্রীর অনুপস্থিতির নেপথ্যে অন্য কারণ দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ তো উঠেছেই। জাল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরের দুই আধিকারিকের সঙ্গে উপাচার্যের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সেই ঘটনায় শাসক দলের সমর্থক কিছু কর্মী জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সমস্ত ঘটনার জেরেই শিক্ষামন্ত্রী সমাবর্তন এড়িয়ে গিয়েছেন বলে মনে করছেন শিক্ষক-ছাত্রদের ওই অংশটি।
শিক্ষামন্ত্রী না এলেও তাঁর লিখিত বক্তব্যে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষক, পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আমরা সরকারে আছি, রাজনীতি করি। কিন্তু কোনও সরকারি পদক্ষেপের সাফল্য শিক্ষক এবং ছাত্রদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব হয় না।’ এ দিন রাজ্যপালের বক্তব্যেও বারবার উঠে এসেছে শিক্ষা আর সামাজিক দায়িত্বের প্রশ্ন। উপাচার্য বলেছেন, ‘‘নোটিস বা ফলপ্রকাশের ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। ঠিক করে নেওয়া হবে।’’ সমাবর্তনে প্রধান অতিথি ছিলেন মুম্বইয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজির’ বিজ্ঞানী মনমোহন শর্মা।
এ দিন দুই প্রতিবন্ধী ছাত্রী, দর্শনের রিঙ্কি সেন এবং ভূগোলের পিউ সাহাকে ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। দু’জনেই সমাবর্তনের শংসাপত্র পেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy