বংশপরম্পরায় তাঁরা নবাবি আমলের বাগান, স্মৃতিসৌধে কাজ করে চলেছেন। কিন্তু বেতন আজও সেই নবাবি আমলের মতোই। আজও কেউ পাঁচ টাকা বেতন পান, কেউ ৫০ টাকা! ৩০০ বছরের পুরনো এই বেতন কাঠামোয় বদলের দাবিতে বিক্ষোভে নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন নবাবি এস্টেটের মালি-ম্যানেজারেরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে বেতন বৃদ্ধি না হলে তাঁরা আমরণ অনশনে বসবেন।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, নবাবি আমলে মালির বেতন ছিল পাঁচ টাকা। মহল সংরক্ষণ ও দেখাশোনার কাজ যে কর্মীরা করতেন, তাঁদের বেতন ছিল ৯ টাকা। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েও প্রতি মাসে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫ টাকা বা ৯ টাকা বেতন ঢোকে। কিন্তু তার পরেও তাঁরা মিরজাফরের সমাধিস্থল, ঘসেটি বেগমের বাড়ি, মতিঝিল পার্ক-সহ নবাবের একাধিক স্মৃতিসৌধের দেখাশোনা করে চলেছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলেন কর্মীরা। কিন্তু এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তার কোনও সুরাহা হয়নি। তাই এ বার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন তাঁরা। জানিয়েছেন, অবিলম্বে বেতন বৃদ্ধি না করলে জেলা প্রশাসনের দফতরের সামনে আমরণ অনশন করবেন বা সেখানে আত্মহত্যা করবেন।
মতিঝিলের সুপারিটেনডেন্ট পদে নিযুক্ত মহম্মদ আরিফ হোসেন জানান, বেতন এখন ৫০ টাকা। তিনি বলেন, ‘‘২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই বেতন নিতে আমার খুব লজ্জা করে। আমার অধীনে এখানে প্রায় ৮-১০ জন কাজ করেন। কারও বেতন পাঁচ টাকা, কারও ১০ টাকা। আমরা সারা মাস ধরে কষ্ট করে এই ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে সংরক্ষণ করছি। আর আমাদের এই সামান্য বেতন। আমরা ইতিমধ্যেই এই বেতন কাঠামো পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। তবে শীঘ্রই এর কোনও সুরাহা না হলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’’
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মৈত্র বলেন, ‘‘ওঁদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’’