Advertisement
E-Paper

‘চেন-খুনি’র ফাঁসির আদেশ কালনায়

পূর্ব বর্ধমান, হুগলিতে ২০১৩ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে এমন পনেরোটি ঘটনা ঘটে। গত বছর জুনে কালনায় কামরুজ্জামানকে ধরে পুলিশ। কালনার সিঙেরকোনে বছর পনেরোর ওই নাবালিকাকে খুনই তার শেষ অপরাধ।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৫:৪৩
আদালতের পথে কামরুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র

আদালতের পথে কামরুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে একা থাকা মহিলাকে গলায় চেন পেঁচিয়ে বা ভারী কিছুর আঘাতে খুন বা খুনের চেষ্টা, এমনটা ঘটছিল বারবার। কিছু ক্ষেত্রে মিলছিল যৌন নির্যাতনের চিহ্নও। তেমনই এক মামলায় ‘চেন-খুনি’ কামরুজ্জামান সরকারের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হল পূর্ব বর্ধমানের কালনা আদালতে। এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের সেই ঘটনাকে ‘বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে সোমবার ওই আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল ফাঁসির সাজা শোনান।

পূর্ব বর্ধমান, হুগলিতে ২০১৩ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে এমন পনেরোটি ঘটনা ঘটে। গত বছর জুনে কালনায় কামরুজ্জামানকে ধরে পুলিশ। কালনার সিঙেরকোনে বছর পনেরোর ওই নাবালিকাকে খুনই তার শেষ অপরাধ। আইনজীবীরা জানান, এই মামলায় খুন, ধর্ষণ-সহ পাঁচটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয় সে। ৩৫ জন সাক্ষ্য দেন।

সোমবার দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ আদালতে তোলার পরে কামরুজ্জামান দাবি করে, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার আইনজীবী অরিন্দম বাজপেয়ীও দাবি করেন, তার মক্কেল নাবালিকার বাড়িতে ঢুকেছিল, তার জোরাল প্রমাণ মেলেনি। পরিবারে সে একমাত্র রোজগেরে ছিল। এখন তার স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ের কষ্টে দিন কাটছে। সব দিক বিবেচনা করে কম সাজা দেওয়ার আর্জি জানান তিনি। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা দেশের কয়েকটি মামলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে এই মামলাটিকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ দাবি করে সর্বোচ্চ সাজার আর্জি জানান।

রায় দিতে গিয়ে বিচারক জানান, বাড়িতেই এক নাবালিকাকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। চিকিৎসকদের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে নিষ্ঠুরতার কথা। সামজিক তাৎপর্য থাকা ঘটনাটিকে তিনি ‘বিরলতম’ বলে মনে করেছেন। দোষীর মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি, তিনি জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রকে মৃত নাবালিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। রায়ের পরে কামরুজ্জামানের স্ত্রী জাহানারা বিবির অবশ্য দাবি, ‘‘আমি বিশ্বাস করি না, ও খুন করতে পারে। ওকে রাস্তা থেকে ধরে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ।’’ তাঁদের আইনজীবী অরিন্দমবাবু জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, ‘চেন-খুনি’র বিরুদ্ধে অন্য মামলাগুলিতেও চার্জশিট জমা পড়েছে। আরও দু’টি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বলে জানান আইনজীবী সৌম্যজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম অপরাধ করার আগে ভাবতে বাধ্য করবে এ দিনের সাজা।’’ ওই নাবালিকার মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে কোনও অপরাধ করেনি। অথচ, কী নিষ্ঠুর ভাবে খুন হল! ওর (কামরুজ্জামান) ফাঁসিই চেয়েছিলাম। অনেক দিন পরে একটু শান্তিতে ঘুমোতে পারব।’’

Chain Killer Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy