Advertisement
E-Paper

সভা করে শক্তি দেখালেন বহিষ্কৃত হুমায়ুন

দল তাঁকে বহিষ্কার করেছিল বৃহস্পতিবার। রবিবার নিজের খাসতালুকে শক্তি প্রদর্শন করলেন সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। রবিবার মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানা থেকে খানিক দূরের মানিক্যহার মোড়ে নিজের অনুগামীদের নিয়ে সভা করেন হুমায়ুন। বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে শুরু হওয়া ওই সভা শেষ হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। ওই সভায় হাজির ছিলেন মূলত বেলডাঙা-২ নম্বর ব্লকের শ’পাঁচেক লোকজন। উপস্থিতদের সিংহভাগই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৩
শক্তিপুরে অনুগামীদের নিয়ে হুমায়ুনের সভা।  —নিজস্ব চিত্র।

শক্তিপুরে অনুগামীদের নিয়ে হুমায়ুনের সভা। —নিজস্ব চিত্র।

দল তাঁকে বহিষ্কার করেছিল বৃহস্পতিবার। রবিবার নিজের খাসতালুকে শক্তি প্রদর্শন করলেন সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর।

রবিবার মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানা থেকে খানিক দূরের মানিক্যহার মোড়ে নিজের অনুগামীদের নিয়ে সভা করেন হুমায়ুন। বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে শুরু হওয়া ওই সভা শেষ হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। ওই সভায় হাজির ছিলেন মূলত বেলডাঙা-২ নম্বর ব্লকের শ’পাঁচেক লোকজন। উপস্থিতদের সিংহভাগই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। স্থানীয় সোমপাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান যুগ্ন বিবি, সোমপাড়া-২ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের নওসাদ আলি এবং আন্দুলবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান আকবর মল্লিকও হুমায়ুনের সমর্থনে সভায় হাজির ছিলেন। এ ছাড়াও ওই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন দলের ৩৪ জন সদস্য এ দিন হুমায়ুনের সমর্থনে সভায় যান। আকবর মল্লিক বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে হুমায়ুনের সঙ্গে রয়েছি। উনি যেখানে যাবেন, আমিও সেখানে যাব। এ দিন ওঁর ডাকেই হাজির হয়েছি।” একই সুর অন্য পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের গলাতেও। তবে, শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরাই নন, এ দিন বিভিন্ন দলের বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির আট জন সদস্যও হুমায়ুনের সভায় হাজির ছিলেন।

দল বিরোধী মন্তব্যের জন্য গত মঙ্গলবার হুমায়ুনকে ‘শো-কজ’ করেছিল দল। তার জেরে ক্ষুব্ধ হুমায়ুন বুধবার তোপ দেগেছিলেন, নিজের ভাইপোকে ‘রাজা বানানোর’ চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলনেত্রীর পাশাপাশি তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামী ইন্দ্রনীল সেনকেও বিঁধতে কসুর করেননি তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার সার্টিফিকেট তুলে ধরে মুর্শিদাবাদ জেলায় রীতিমতো তোলাবাজির কারবার খুলে বসেছেন ওই গায়ক-নেতা। তার জেরে বৃহস্পতিবারই হুমায়ুনকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, ওই দিন মধ্য রাতেই তাঁর নিরাপত্তাকর্মী প্রত্যাহারের নির্দেশও জারি করেছিল রাজ্য সরকার।

বহিষ্কারের ঠিক তিন দিনের মাথায় এলাকায় নিজের সাংগঠনিক শক্তি কিছুটা দেখিয়ে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন। তবে, নিজের অনুগামীদের নিয়ে রবিবার যে সভা করেছেন হুমায়ুন, সেখানে অবশ্য তাঁর মুখে তৃণমূলের কোনও সমালোচনা শোনা যায়নি। তিনি দাবি করেছেন, বহিষ্কার বা শো-কজের কোনও চিঠি দলের তরফে এখনও তাঁর হাতে পৌঁছয়নি। খবরের কাগজে বহিষ্কারের কথা পড়েছেন। তাঁর দল ছাড়া নিয়ে যে জল্পনা শুরু হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে হুমায়ুনের সাবধানী মন্তব্য, “আমি এখনই তৃণমূল ছেড়েছি, এমনটা বলব না। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেব। একা একা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে যাব না।” যদিও এ দিন তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছেন ওই সভায়। দোলের পর থেকেই তিনি জেলা জুড়ে অনুগামী জোগাড়ে ঝাঁপাবেন বলে জানিয়ে হুমায়ুন বলেন, “বেলডাঙা-২ ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে কথা বলব। শুধু তাই নয়, জেলা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুরুত্ব পাচ্ছেন না, এমন নেতাদের সঙ্গেও কথা বলব।”

জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডল অবশ্য হুমায়ুনের সভাকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “দল ওঁকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে। তৃণমূলের কেউ ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাদের কোনও সদস্য হুমায়ুনের সভায় যাননি বলে দাবি করেছে কংগ্রেস এবং সিপিএম।

humayun kabir tmc turmoil shaktipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy