পশ্চিমবঙ্গের ঝালদায় ডায়াবেটিস শিবির থেকে রাঁচিতে ফিরছিলেন বলে দাবি করেছেন বর্ধমান-হাতিয়া প্যাসেঞ্জার থেকে বিস্ফোরক-সহ ধৃত ইন্তেজার আলি। তদন্তকারীদের ইন্তেজার জানিয়েছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা কাজে তাঁকে মাঝেমধ্যেই বর্ধমান-সহ পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায় যেতে হয়।
ইন্তেজার সত্যিই ঝালদায় ডায়াবেটিস ক্যাম্পে গিয়েছিলেন কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ঝাড়খণ্ড পুলিশের এডিজি সত্যনারায়ণ প্রধান বলেছেন, ‘‘ইন্তেজারকে জেরা করা হচ্ছে।’’ তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ইন্তেজারের কাছে আরবি ভাষায় লেখা কিছু সংকেতিক লেখা পাওয়া গিয়েছে। সেই লেখাগুলো কী তা জানার চেষ্টা চলছে। ডিআইজি অরুণ কুমার সিংহ বলেছেন, ‘‘ইন্তেজারের মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার খুঁটিয়ে দেখে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।’’
এক তদন্তকারী জানান, গত বছর অক্টোবর মাসে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণর-কাণ্ডে অভিযোগের তির উঠেছিল জামাতুল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনের দিকে। সেই জঙ্গি সংগঠনের কোনও সদস্যই বর্ধমান থেকে বিস্ফোরক নিয়ে আসছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রয়োজনে খাগড়াগড়-কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন ঝাড়খণ্ড পুলিশের অফিসাররা।
ইন্তেজারের কাছ থেকে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় সিআইডি, আইবি ও ঝাড়খণ্ড পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ তদন্তে নেমেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রেনে বিস্ফোরকগুলি উদ্ধার হয়েছিল ইন্তেজারের আসনের নিচ থেকে। তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, আসনের নিচে যে এত বিস্ফোরক রাখা আছে তা ইন্তেজার না-ও জানতে পারেন। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে বিপুল পরিমাণ ওই বিস্ফোরক কে নিয়ে আসছিল? কেনই বা সেগুলি নিয়ে আসা হচ্ছিল?
ইন্তেজার পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব অলটারনেটিভ মেডিসিন’ থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক। রাঁচির হিন্দপিড়ির যে পাড়ায় ইন্তেজার থাকেন সেখানে তিনি ‘ডাক্তার সাহেব’ হিসেবেই পরিচিত। গত রাত থেকেই তাঁর তিন তলা বাড়ির সামনে ভিড় জমেছে। পাড়ার বাসিন্দারই বক্তব্য, কারও সাতেপাঁচে থাকেন না ইন্তেজার। এক পড়শি বলেন, ‘‘রোগীকে ইনজেকশন দিতে চাইতেন না ডাক্তারবাবু। কারও দেহে সূঁচ ফোঁটাতে ভয় পেতেন। এ রকম নরম মনের মানুষ তিনি।’’ ইন্তেজারের স্ত্রী রেহেনা খাতুন বলেন, ‘‘ঝালদায় ডায়াবেটিস ক্যাম্প থেকে ও (ইন্তেজার) ফোন করেছিল। গত কাল বিকেল থেকে ফোন বন্ধ। বাড়িতে পুলিশ এলো সন্ধেয়।’’
গত রাতে ইন্তেজারের বাড়ি থেকে তাঁর মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy