Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কালিয়াচক থেকেই জাল নোট দক্ষিণে

সব পথ গিয়ে মিশেছে একটাই বিন্দুতে। তার নাম কালিয়াচক। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে অসম, ভারতের যে রাজ্যের জালনোটের কারবারিই হোক না কেন, মাল ‘ডেলিভারি’ নিতে তাকে আসতে হবে মালদহের ওই এলাকাতেই।

সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৭
Share: Save:

সব পথ গিয়ে মিশেছে একটাই বিন্দুতে। তার নাম কালিয়াচক। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে অসম, ভারতের যে রাজ্যের জালনোটের কারবারিই হোক না কেন, মাল ‘ডেলিভারি’ নিতে তাকে আসতে হবে মালদহের ওই এলাকাতেই।

জালনোটের কারবারে জড়িত বহু ছোট, মাঝারি মাছ জালে উঠেছে। তার পরে এ বার সরাসরি রাঘব বোয়ালদের দিকে হাত বাড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রবিবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র এক কর্তা বললেন, ‘‘জাল নোট চক্রে মালদহের তিন-চার জন পাণ্ডাকে আমরা চিহ্নিত করেছি। সবাই কালিয়াচকের বাসিন্দা। কিন্তু আমরা টার্গেট করেছি এক জনকে। তাকে ধরতে পারলে গোটা চক্রটাকে ধাক্কা দেওয়া যাবে।’’ ওই অফিসারের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সাবধানে এগোতে হচ্ছে। রাজনৈতিক ও আর্থিক, দু’দিক দিয়েই ওই ব্যক্তি প্রভাবশালী। বাংলাদেশে তার ঘন ঘন যাতায়াত।’’

শুক্রবার এনআইএ-র হায়দরাবাদ শাখার গোয়েন্দারা বিশাখাপত্তনম আদালতে অসমের বরপেটার দুই বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন ও আমিরুল হকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে। এনআইএ জানাচ্ছে, ওই দু’জন বেঙ্গালুরুতে ভাড়া নিয়ে থাকত এবং মালদহ থেকে জাল নোট নিয়ে এসে ছড়াত দক্ষিণ ভারতের ওই শহরে। মালদহের কারা তাদের জালনোট সরবরাহ করেছে, সেটা সন্ধান করতে গিয়েই বেরিয়ে এসেছে পাণ্ডার নাম।

জাল নোটের চক্রে জড়িত মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দাদের মালদহ যেতে হতেই পারে, বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকা জালনোট নিতে। তা বলে এই চক্রে সামিল অসমের বাসিন্দাদের মালদহে গিয়ে জালনোট আনতে হবে কেন? যেখানে অসমেরও বিস্তীর্ণ এলাকা বাংলাদেশ ঘেঁষা!

এনআইএ-র আইজি পদমর্যাদার এক অফিসার রবিবার দিল্লি থেকে ফোনে বলছিলেন, ভারতে জালনোটের কারবার করতে হলে মালদহকে বাদ দিয়ে হবে না। প্রথমত, মালদহে বাংলাদেশ সীমান্তের ঠিক ও পারেই রাজশাহি, চাঁপাই নবাবগঞ্জ। যা জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ঘাঁটি। ওদেরই একটা অংশ ভারতীয় জালনোটের কারবারে সরাসরি জড়িত। আবার মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দাদের কয়েক জনই এ পারে এই চক্রের পাণ্ডা। তাদের মতো নেটওয়ার্ক ভারতের অন্য কোথাও অন্য কেউ তৈরি করতে পারেনি। ওই অফিসারের কথায়, ‘‘আমরা সেই জন্যই একটা রাঘব বোয়ালকে জালে তুলতে চাইছি। আর ছোট, মাঝারি মাছ তুলে লাভ হবে না। কারণ, কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকার বহু এলাকায় ঘরে ঘরে জালনোটের কারবারি। কাকে ছেড়ে কাকে ধরব?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake note kaliachak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE