Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রয়াত অনিল অধিকারী, শোকজ্ঞাপন সব দলের

ফালাকাটাতেই জন্ম অনিল অধিকারীর। পেশায় ছিলেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। ৯০-এর দশকে প্রথমবার পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সাল থেকে পাঁচ বছর ধরে ফালাকাটা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন।

শোকার্ত: অনিল অধিকারীর দেহ আঁকড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর মেয়ে মৌসুমী। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

শোকার্ত: অনিল অধিকারীর দেহ আঁকড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর মেয়ে মৌসুমী। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৬
Share: Save:

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা গেলেন ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারী। বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ অনিল অধিকারীর পরিজনেরা তাঁর দেহ নিয়ে সড়ক পথে কলকাতা থেকে ফালাকাটার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। অনিলবাবুর মৃত্যুতে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ দলমত নির্বিশেষে সবাই শোক জানান।

ফালাকাটাতেই জন্ম অনিল অধিকারীর। পেশায় ছিলেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। ৯০-এর দশকে প্রথমবার পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সাল থেকে পাঁচ বছর ধরে ফালাকাটা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। সামলেছেন দলের আলিপুরদুয়ার সংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্বও। ২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে লড়াই করে হারতে হয় তাঁকে। তবে ২০১১ সালে ফালাকাটা থেকে জেতেন তিনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হন অনিল।

তৃণমূল ও বিধায়কের পরিবার সূত্রের খবর, বছরখানেক ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন অনিল অধিকারী। মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর দীর্ঘ চিকিৎসা হয়। তাঁর চিকিৎসার খরচ দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এক সময়ে টালবাহানার অভিযোগ তোলেন অনিলের পরিজনেরা। যদিও পরে সরকারের তরফে চিকিৎসার খরচ মিটিয়ে দেওয়া হয়। বিধায়কের পরিবার সূত্রের খবর, পুজোর আগে কেমো নিতে তাঁকে মুম্বইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত শনিবার সেখান থেকে নিয়ে এসে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয় বিধায়ককে। এ দিন সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিধায়কের এক ছেলে, চার মেয়ে ও নাতি-নাতনিরা বর্তমান।

ফালাকাটার বিধায়কের মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন মেডিক্যাল কলেজে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ দেহ নিয়ে সড়ক পথে ফালাকাটার দিকে রওনা হন অনিলের আত্মীয়রা। সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ও বিনয়। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘যখন আমরা কেউ বিধায়ক হইনি, তখন থেকেই অনিলদার সঙ্গে পরিচয়। আমাদের দু’জনের মধ্যে খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল।’’ রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম।’’

অনিল অধিকারীর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফালাকাটা-সহ গোটা আলিপুরদুয়ার জেলায়। বিধায়কের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফালাকাটার বিভিন্ন কালীপুজো মণ্ডপের মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “অনিল অধিকারীর মৃত্যুতে দলের যে ক্ষতি হল, তা কখনওই পূরণ করা সম্ভব নয়।” দলের নেতারা জানিয়েছেন, এত দূর থেকে সড়ক পথে অ্যাম্বুল্যান্সে রওনা হওয়ার জন্যই প্রয়াত বিধায়কের দেহ শুক্রবার দলের আলিপুরদুয়ার জেলা পার্টি অফিসে আনা হবে না। তার বদলে বিধায়ককে শ্রদ্ধা জানাতে ফালাকাটায় সব ব্লক নেতৃত্বকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Falakata TMC MLA Anil Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE