খেজুরিতে জোড়া খুনে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। উচ্চ আদালতের সেই একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এ বার ডিভিশন বেঞ্চে গেল পরিবার। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা।
সিবিআই তদন্তের উপর যে আস্থা নেই, তা পরোক্ষে বুঝিয়ে দিয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তাঁর নির্দেশ ছিল, সিট গঠন করে তদন্ত করবে সিআইডি। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পরিবার যে মামলাটি করেছে, সেটি উঠেছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে।
সোমবার ওই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে কেস ডায়েরি তলব করেছে। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি।
খেজুরিতে জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে এসেছিলেন মামলাকারীরা। সোমবার সেই আর্জি খারিজ করে দেন বিচারপতি ঘোষ। শুনানি চলাকালীন তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘সিবিআই এখন গ্যালারি শো করে! এই মামলায় রাজ্য পুলিশই তদন্ত করবে।’’ মূলত, বিচারপতি বুঝিয়ে দেন, সিবিআইয়ের বদলে রাজ্য পুলিশের উপরেই আস্থা রয়েছে তাঁর।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুলাই মহরম উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল খেজুরি থানার ভাঙনমারি গ্রামে। পর দিন সকালে অনুষ্ঠানস্থলের কিছু দূরেই দুই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের এক জনের নাম সুধীর পাইক, অন্য জন সুজিত দাস। পরিবারের দাবি, দু’জনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। যদিও অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা দাবি করেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। একই দাবি করে শাসকদল তৃণমূলও। তবে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, ধর্মীয় কারণে খুন হয়েছেন ওই দুই যুবক। জোড়া মৃত্যু নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। বিতর্ক শুরু হয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও। অভিযোগ, প্রথমে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে পুলিশ জানায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তা মানতে না চেয়ে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতদের পরিজনেরা। পরের বার ময়নাতদন্তে জানা যায়, দু’জনের দেহেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একই দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দু’বার দু’রকম আসে কী করে, তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। গোটা তদন্তের মোড়ও ঘুরে যায় ভিন্ন দিকে।