Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছেলেদের দলে কেন? ছাত্রীর নাম বাদ বিশ্বভারতীতে

ছেলেদের সঙ্গে তিনিও ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলেন। সুযোগ পেলে তিনিও যে কম যান না, চেয়েছিলেন মাঠে নেমে দেখাতে।

কেটে দেওয়া হয়েছে মেঘার নাম। নিজস্ব চিত্র

কেটে দেওয়া হয়েছে মেঘার নাম। নিজস্ব চিত্র

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায় 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০২:২৭
Share: Save:

ছেলেদের সঙ্গে তিনিও ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলেন। সুযোগ পেলে তিনিও যে কম যান না, চেয়েছিলেন মাঠে নেমে দেখাতে। কিন্তু, সেই অনুমতি তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাণীবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মেঘা দাস কবিরাজ।

বিশ্বভারতী স্পোর্টস বোর্ডের উদ্যোগে হওয়া আন্তঃভবন ক্রিকেট টুর্নামেন্টে যোগ দেওয়ার আবেদন করেও সুযোগ না পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। সোমবার শিক্ষাভবনের সঙ্গে পল্লিশিক্ষা ভবনের ম্যাচ ছিল। শিক্ষাভবনের হয়ে ‘প্লেয়িং ইলেভেন’ হিসেবে তিনি মাঠে থাকতে চাইলেও তাঁকে চলে যেতে বলা হয় বলে মেঘার দাবি। এ নিয়ে লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী। মেঘার কথায়, ‘‘উপাচার্যের কার্যালয়ে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। এখনও সেখান থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।’’

মেঘা বীরভূম জেলা দলের হয়ে দু’বছর খেলেছেন। রোজ অনুশীলনও করেন। শিক্ষাভবন দলের অধিনায়ক দেবাশিস মাজিও বলছেন, ‘‘মেয়েটা খেলার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও খেলতে পারল না। একটা ভাল প্রতিভাকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টাও করলেন না কর্তৃপক্ষ।’’বিশ্বভারতী স্পোর্টস বোর্ডের আয়োজনে প্রতি বছরই একটি করে টুর্নামেন্ট হয়। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনের ছাত্রদের নিয়ে দল তৈরি হয়। বিশ্বভারতীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তিতে বলা থাকে, প্রতিযোগিতাটি পুরুষদের জন্য (ফর মেন)। মেঘার দাবি, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রতিটি ভবনদলের প্রতিনিধিদের নিয়ে যখন বৈঠক হয়েছিল, সেই সময় শিক্ষাভবনের প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, এক ছাত্রী এ বছর খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সেই সময় আপত্তি ওঠেনি। তিনি বলেন, ‘‘খেলা চলাকালীন আমার কোনও আঘাত লাগলে আমি দায়ী থাকব, এই মর্মে ভবনের অধ্যক্ষকে লিখিত দিতে বলা হয়েছিল। সেই চিঠি জমা দিতে যাওয়ার সময়েও অধ্যক্ষ আমাকে খেলতে নিষেধ করেননি।’’ মেঘার দাবি, তাঁর আঘাত লাগলে কর্তৃপক্ষের নাম খারাপ হবে, খেলা চলাকালীন বাইরে থেকে কেউ কটূক্তি করতে পারে এবং ছেলেদের দলে মেয়ে খেলবে—এই সব কারণ দেখিয়ে যখন দলের লিস্ট থেকে মেঘার নাম কেটে দেওয়া হয়। শিক্ষাভবনের অধ্যক্ষ কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি যা করেছি, সবটাই স্পোর্টস বোর্ডের নির্দেশে করেছি। কারণ এই টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল তারাই।’’ স্পোর্টস বোর্ড জানিয়েছে, এই টুর্নামেন্ট যে ছাত্রদের জন্যই হবে, তা জানিয়ে আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে যাওয়ার পরে হঠাৎ নিয়ম পরিবর্তন করা যায় না। তার পরেও ওই ছাত্রী বোর্ডের আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগ মানেননি মেঘা। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বভারতীর মহিলা ক্রিকেট দল নেই। মহিলা দল থাকা সত্ত্বেও যদি আমি পুরুষদের সঙ্গে খেলতে চাইতাম, তা হলে আপত্তির কারণ বুঝতাম। পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি একটাই দলে নারী-পুরুষ বিভেদ কেন করা হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati Cricket Tournament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE