Advertisement
E-Paper

ঝাড়খণ্ড সীমানায় নজর বাহিনীর

প্রথম দফার নির্বাচনে পুরুলিয়া আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইতিমধ্যেই জেলার জঙ্গলমহলে কিছু জওয়ান টহল দিতে শুরু করেছিলেন। রবিবার আর চার কোম্পানি বাহিনী এল জেলায়। ওই বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর, জয়পুর ও ঝালদা এই চার থানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৮
পুরুলিয়া স্টেশনে এসে পৌঁছল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়া স্টেশনে এসে পৌঁছল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

প্রথম দফার নির্বাচনে পুরুলিয়া আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইতিমধ্যেই জেলার জঙ্গলমহলে কিছু জওয়ান টহল দিতে শুরু করেছিলেন। রবিবার আর চার কোম্পানি বাহিনী এল জেলায়। ওই বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর, জয়পুর ও ঝালদা এই চার থানায়। এই চার কোম্পানির মধ্যে রয়েছে তিন কোম্পানি বিএসএফ ও এক কোম্পানী সিআরপিএফ। বিএসএফ পাঠানো হয়েছে রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া ও জয়পুরে। সিআরপিএফ মোতায়েন করা হচ্ছে ঝালদায়।

তবে মোট কত কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচন কমিশন পুরুলিয়ায় পাঠাচ্ছে তা ভাঙতে চায়নি জেলা প্রশাসন। তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মোট ১৩০ কোম্পানির মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় আসার কথা। এ বার কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এড়িয়ে বাহিনীকে রাখতে হবে। সে কারণে এত বিপুল পরিমাণ জওয়ানকে রাখার ব্যবস্থা করতে হিমসিম খাচ্ছেন প্রশাসনের অনেক আধিকারিক।

পুরুলিয়ায় একসময় মাওবাদীদের উপদ্রুত থাকা জঙ্গলমহল এলাকায় আগে থেকেই তিন কোম্পানি সিআরপিএফ মোতায়েন রয়েছে। বান্দোয়ান থানার কুচিয়া, গুড়পানা ও বরাবজারের বেড়াদায় রয়েছে এই তিন কোম্পানির জওয়ান। নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকেই এই তিন কোম্পানি বাহিনী চলে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের আওতায়। এই তিন কোম্পানিকে অবশ্য মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা থেকে সরানো হচ্ছে না। শনিবার থেকে ওই জওয়ানরা এলাকায় ‘এরিয়া ডমিনেশন’ ও ‘রুট মার্চ’ শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বান্দোয়ান ও বরাবাজারে আগে থেকেই মোতায়েন থাকা আধাসামরিক বাহিনীকে মাওবাদী সমস্যা সামাল দিতে রাখা হয়েছিল। ফলে নির্বাচনে ওই কোম্পানিকে মাওবাদী উপদ্রুত এলাকাতেই রাখা হচ্ছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার রবিবার বলেন, ‘‘বান্দোয়ান ও বরাবাজারে আগে থেকেই তিন কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। রবিবার আরও চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় এসেছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চ করে মানুষকে সাহস জোগাবেন।”

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডভান্স ফোর্স হিসাবে আসা এই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মূলত ভোটারদের মনোবল বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঝামেলা হলে তা সামলাতেও জওয়ানরা ময়দানে নামবেন। তবে ঘটনা হল জেলায় মোতায়েন হওয়া সাত কোম্পানির মধ্যে পাঁচ কোম্পানিকে রাখা হচ্ছে ঝাড়খন্ড সীমানা লাগোয়া একদা মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায়। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্বাচনে মাওবাদীরা যে গোলমাল পাকাবে না, সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ঝাড়খণ্ডে সক্রিয় মাওবাদী স্কোয়াড রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে নির্বাচনের সময়ে এ রাজ্যে ঢুকে নাশকতা ঘটানোর ছক কষেছে বলে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য পুলিশ, প্রশাসনের কাছে এসেছে। তাই সর্তকতা হিসেবে অ্যাডভান্স ফোর্সের সাত কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে পাঁচ কোম্পানিকেই রাখা হয়েছে ওইসব এলাকায়। বাকি দুই কোম্পানীকে পাঠানো হয়েছে জেলা সদর পুরুলিয়া ও অপর মহকুমাশহর রঘুনাথপুরে।

জেলার বিডিও এবং ওসিদের অভিজ্ঞতা, অ্যাডভান্স বাহিনীর জওয়ানরা একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করেন। তাঁদের আগ্নেয়াস্ত্র, বিছানপত্র ও রান্নার সরঞ্জাম ইত্যাদি মিলিয়ে দু’-তিনটি বড় ঘর লাগে। যেখানে তাঁরা থাকেন সেখানে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা, আলো-পাখা ও শৌচালয় থাকতে হবে। অনেক সময় প্রয়োজন অনুযায়ী সাময়িক শৌচালয় বানিয়ে দেওয়া হয়। আগে স্কুল-কলেজে জওয়ানদের রাখার ব্যবস্থা করা হতো। কিন্তু তাতে অনেক সময় স্কুল-কলেজের পঠনপাঠন ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ আগের নির্বাচনগুলিতে উঠেছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এতদিন ধরে বাহিনী রাখা যাবে না বলে নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে। তাই অন্য জায়গায় এ বার তাঁদের রাখতে হচ্ছে। জঙ্গলমহলের এক বিডিও বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলে অনেক অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। কিন্তু ব্লক সদরগুলিতে সে সব বাড়ি কোথায়? কমিউনিটি হলে সাকুল্যে ৬০-৭০ জনের জায়গা হতে পারে। বাকি ৪০-৫০জন জওয়ানকে রাখব কোথায় ভেবে পাচ্ছি না।’’

জেলা এক কর্তা জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, কিসান মান্ডি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অ্যাডভান্স সেন্ট্রাল ফোর্স রাখা যাবে না। তাই আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে এই খবরে এখন জল, আলো, শৌচালয়ের সুবিধা যুক্ত জায়গার খোঁজ করতে বেশ কয়েকদিন ধরে সরকারি আধিকারিকরা জায়গা খুঁজতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। কেউ নিশ্চিন্ত হয়েছেন, কেউ এখনও খুঁজে চলেছেন।

Paramillitary malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy