প্রতীকী ছবি।
চাকরি শব ব্যবচ্ছেদের। ন্যূনতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে। কিন্তু সেই পদের জন্য আবেদন করেছেন স্নাতকোত্তর, স্নাতক এমনকী পিএইচডি-র জন্য গবেষণা করছেন এমন এক প্রার্থীও। তাঁদের এক জনের বক্তব্য, সব জেনেই আবেদন করেছেন। বলেন, ‘‘ডোমের চাকরি তো, তাই ভেবেছিলাম প্রতিযোগিতা কম হবে। চাকরিটা পাওয়ার আশাতেই দরখাস্ত করেছি।’’
এর আগেও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর প্রার্থীরা। সেই পরীক্ষারও যোগ্যতামান ছিল অষ্টম শ্রেণি। তখনও শোরগোল পড়েছিল। কিন্তু ডোমের চাকরির জন্য এমন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দরখাস্ত করার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন সরকারি অফিসারেরা।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রতীপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘শব ব্যবচ্ছেদে সহায়তা করতে দু’জন লোক দরকার। আমরা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখছি পিএইচডি, স্নাতকোত্তররাও আবেদন করে ফেলেছেন। এটুকু বলতে পারি, আমরা বিস্মিত।’’
আরও পড়ুন: লড়াইয়ে পিছিয়ে ভারতই: অমর্ত্য
তবে উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের যে এই কাজে তাঁরা উৎসাহ দেবেন না, তা-ও মোটামুটি বুঝিয়ে দিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সহকারী অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করব।’’ তাঁর ধারণা, ওই প্রার্থীরা হয়তো বুঝতে পারেননি, ঠিক কী কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি চাকরির নিশ্চয়তার কথা ভেবেই বোধহয় অনেকে আবেদন করেছেন।’’ তবে রোমান হরফে ‘ডোম’ শব্দটি বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, ডোমের কাজ কিন্তু সহজে করা যায় না। তা-ও শিখতে হয়।
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মত, ‘‘যে কোনও পদে আবেদন করার মানসিক বাধা কাটছে, তা ভাল। কিন্তু তা নিজে থেকে হচ্ছে না। রাষ্ট্র বাধ্য করছে। যে সমস্ত পড়ুয়া যোগ্য হয়ে উঠেছেন, তাঁদের জন্য চাকরি নেই।’’ শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িও বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে যে ভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চলছে, তাতে শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকেছে। এ তারই প্রমাণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy