দার্জিলিঙে বৈঠক। রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।
ধস বিধ্বস্ত দার্জিলিং পাহাড়ের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ, বুধবার পাহাড়ে আসছে জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (জিএসআই) এক প্রতিনিধি দল। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দলের সদস্যদের সঙ্গে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কি কি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বর্ষার মরশুমে রাস্তা খোঁড়া বন্ধ রাখা ও বিভিন্ন দফতরের অধীনে থাকা নর্দমা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে জল ঢুকে মাটি ও পাথর আলগা হয়ে যাওয়া আটকাতে এই পদক্ষেপ গুলি নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বহুতল নির্মাণ নিয়েও রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
মঙ্গলবার ধসের পর ত্রাণ নিয়ে দার্জিলিঙে একটি বৈঠক হয়। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকেই প্রশাসনের তরফে বিষয়গুলি জানানো হয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘বুধবার জিএসআই-র একটি দল পাহাড়ে আসছেন। তাঁরা একটি সমীক্ষাও করবেন। তার পরেই আমরা তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নেব।’’ জেলাশাসক জানান, সমস্যাগুলি কোথায় তা জানার চেষ্টা করা হবে। বিশেষ কোনও এলাকার মানুষজনকে যদি সরাতেও হয়, তাও করা হবে। দলটি মিরিকেও যাবেন বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। বাকি তাঁরা কোথায় কোথায় যাবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি।
পাহাড়ের বর্তমান অবস্থায় বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার কথাও এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত মোবাইল সংস্থাকে রাস্তা খুঁড়ে তার পাতার কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলিকে নিকাশি নালা পরিষ্কার করা এবং যেখানে নালাগুলি খারাপ অবস্থায় রয়েছে তা ঠিক করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মহকুমা শাসক এবং বিডিওকে পাহাড়ের বহুতল নির্মাণ নিয়ে একটি রির্পোট তৈরি করতেও বলা হয়েছে।’’
এদিনের বৈঠক প্রসঙ্গে প্রশাসনিক কর্তারা জানান, ত্রাণ নিয়ে তথ্য জানানোর জন্যই বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল। ত্রাণ শিবিরগুলির কী অবস্থা, সরকার কী ধরণের সাহায্য করছে তা সবাইকে জানানো হয়েছে। এতে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের কাছেও তথ্য পৌঁছাবে। কোথাও কোনও এলাকা বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি তৈরি হলেও সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এলাকাগুলি খালি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কোথাও পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছালে তা জানাতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ, দুই ধরণের বাড়ির তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে পাহাড়ে ৪৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এতে আপাতত ৩২০০ বাসিন্দা রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি, রাস্তা, ফুটব্রিজ, ও কালভার্টের হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পে বাড়ি তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। আপাতত সমস্ত রাস্তা খোলা হয়েছে। সেগুলি কিছু মেরামতের কাজও হবে। তবে কোলাখাম এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সেখানে যোগাযোগের রাস্তাটি উড়ে গিয়েছে। সংস্কার শুরু হয়েছে।
দার্জিলিঙের বিধায়ক ত্রিলোক দেওয়ান জানান, রাস্তা সংস্কারের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। রাস্তা খোলা থাকলে ত্রাণ নিয়ে বা কোনও ঘটনা ঘটলে পৌঁছাতে সমস্যা হবেনা। আর মোবাইল সংস্থাগুলিকে আপাতত কোনও খোঁড়াখুড়ি করতে দেওয়া হবে না। একইভাবে তৃণমূলের পাহাড়ের নেতা এনবি খাওয়াস জানান, দুর্গতদের বাড়ি তৈরির উপর জোর দিতে বলা হয়েছে প্রশাসনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy