আজ বুধবার থেকে পাহাড়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ৮ জুন পর্যন্ত চলবে প্রতিবাদ মিছিল। রাজ্য যে ত্রিভাষা নীতি চালু করার কথা ভাবছে, তাতে নেপালির জায়গায় বাংলা পড়ানো হবে সেই আশঙ্কাতেই এই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত। আর তা ঘিরে চাপানউতোর শুরু হয়েছে মোর্চার অন্দরে।
বুধবারই দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সি দাস বলেন, ‘‘পাহাড়ে নেপালির জায়গায় বাংলা পড়ানো হবে এমন সিদ্ধান্ত রাজ্য নেয়নি। এমন সরকারি বিজ্ঞপ্তিও নেই। তা নিয়ে যাবতীয় রটনা ভিত্তিহীন।’’ আর দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগিও জানান, যা ঘটেইনি তা নিয়ে আন্দোলনের নামে পর্যটন মরসুমে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আন্দোলনের অধিকার সকলের রয়েছে। তা বলে পর্যটন মরসুমে অশান্তি, হয়রানি বরদাস্ত হবে না।’’ রাজ্যের এই অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পরেই মোর্চার ঘরোয়া কাজিয়া তুঙ্গে উঠেছে। দলের একপক্ষ বলছেন, জিটিএ-র পক্ষ থেকে রাজ্যের কাছে বিষয়টি সরকারি ভাবে জানতে চাইলে জটিলতা না-ও হতে পারত।
তবে দলের কট্টরপন্থীরা মনে করেন, দু’দিনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে ৮ জুন পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল চালিয়ে যেতেই হবে। সেই সঙ্গে এই আন্দোলনের প্রতি দিল্লির নজর টানতে যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেছে মোর্চা। ১৬ জুন ফের দিল্লিতে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির নেতৃত্বে ধর্না দেবেন মোর্চা নেতারা।
তবে প্রবল বৃষ্টির জেরে দিল্লির ধর্না মঞ্চে এ দিন ভিড় ছিল সামান্যই। আসেননি কোনও শীর্ষ নেতাই। মোর্চার দিল্লি শাখার সভাপতি মনোজশঙ্করের নেতৃত্বে বিক্ষোভে যোগ দেন ৩০-৪০ জন যুবক-যুবতী। মনোজ বলেন, ‘‘আশঙ্কা থেকেই আন্দোলন, সেটা ঠিক। তবে রাজ্য যদি পাহাড়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলাকে ঐচ্ছিক হিসেবেও রাখতে বলে, আমরা পাল্টা সমতলে দশম পর্যন্ত নেপালি ঐচ্ছিক হিসেবে রাখতে বলব।’’
ঘটনা হল, রাজ্যে ত্রিভাষা নীতি চালু করার সময়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সব পড়ুয়ারই নিজস্ব ভাষা বেছে নেওয়ার অধিকার থাকবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তিনটি ভাষা বাছাইয়েরই অধিকার থাকবে। কোনও পড়ুয়া প্রথম ভাষা হিসাবে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, নেপালি ইত্যাদি পড়তে পারবে। তবে তিন ভাষার মধ্যে বাংলা নিতেই হবে।