Advertisement
E-Paper

পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাত কত, জানে না রাজ্য

রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত কত, তা এখনও সরকারের জানা নেই বলে কার্যত স্বীকার করে নিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৯
পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত কত জানেন নেই বলে কার্যত স্বীকার করে নিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত কত জানেন নেই বলে কার্যত স্বীকার করে নিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত কত, তা এখনও সরকারের জানা নেই বলে কার্যত স্বীকার করে নিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধে প্রশ্নোত্তর পর্বে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, স্কুলে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত ৩০ বা ৩৫ : ১ হওয়ার কথা। এ রাজ্যের স্কুলগুলিতে সেই অনুপাত কত? তাঁর বক্তব্য, মন্ত্রী বেসরকারি স্কুলের রমরমায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। কিন্তু সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে লেখাপড়ার মান ও পরিকাঠামো উন্নত না হলে বেসরকারি স্কুলের রমরমা বাড়বেই। তাই রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ও শিক্ষকের অনুপাত জানা জরুরি। জবাবে পার্থবাবু জানান, ওই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল নয়। মূল সমস্যা হল— শিক্ষকের বিন্যাস অনেক জায়গাতেই অযৌক্তিক হয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, কোথাও পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক বেশি, আবার কোথাও পড়ুয়া বেশি, শিক্ষক কম। মন্ত্রীর আরও অভিযোগ, বাম জমানায় প্রয়োজন না দেখে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল বলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে রাজ্য সরকার যুক্তিসঙ্গত ভাবে শিক্ষক বিন্যাসের চেষ্টা করছে। অর্থাৎ, যেখানে পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক কম, সেখানে অন্য জায়গা থেকে শিক্ষকদের পাঠানো হবে। দু’-তিন মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। তার পর সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত হিসাব করা হবে।

রাজ্যে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে বলেও এ দিন বিধানসভায় দাবি করেন পার্থবাবু। কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র জানতে চান, রাজ্যে স্কুলছুট ছাত্রের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে কি না, বাড়লে তার কারণ কী এবং এর মোকাবিলায় সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? জবাবে পার্থবাবু জানান, রাজ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা কমছে। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী প্রভৃতি সরকারি প্রকল্প এবং আধুনিক, বাস্তবসম্মত পঠনপাঠনের ব্যবস্থার জোরেই এটা সম্ভব হয়েছে।

নিজের বক্তব্যের সমর্থনে ইউডাইসের সমীক্ষার রিপোর্টও এ দিন বিধানসভায় তুলে ধরেন মন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি দেখান, ২০১৬-’১৭ শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুটের হার প্রাথমিকে ৩.৮৫%, উচ্চ প্রাথমিকে ৭.৫%, মাধ্যমিকে ২৬.৩২% এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ২১.৫২% ছিল। ২০১৭-’১৮-তে তা কমে হয়েছে প্রাথমিকে ২.১২%, উচ্চ প্রাথমিকে ০.১৭%, মাধ্যমিকে ১৪.৬৪% এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ১১.০৪%। মন্ত্রী আরও জানান, সব শিশুকে স্কুলে আনার জন্য শিশু তথ্যপঞ্জি চালু করা হয়েছে। তার জন্য প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে বুথভিত্তিক সমীক্ষা হয়। আগে ১৪ বছর পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীরা এর আওতায় ছিল। এখন ১৮ বছর পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদেরও ওই পঞ্জিভুক্ত করা হয়েছে।

এই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের হার প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকের তুলনায় বেশি। তা হলে কি ১৪-১৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা কাজের অভাবে রাজ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে? অসিতবাবুর এই অতিরিক্ত প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু জানান, বাম জমানায় শিক্ষায় যথেষ্ট জোর দেওয়া হয়নি। সাত বছরে সব ঠিক করা যায় না। তাঁরা চেষ্টা করছেন। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘এখন তো শুনি, ফার্স্ট বয়ও কৃষিকাজে চলে যাচ্ছে! সবটা শিক্ষা দফতর করতে পারবে না। এটা একটা সামাজিক সমস্যা।’’

Ratio Taecher Student Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy