Advertisement
১১ মে ২০২৪

অনিচ্ছুকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু রাজ্য সরকারের

সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’দের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো টাটা প্রকল্পে অধিগৃহীত জমি চাষিদের ফেরানোর জন্য চিহ্নিত করা এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ তো চলছেই।

কাগজপত্র জমা নেওয়া চলছে বেড়াবেড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর দে

কাগজপত্র জমা নেওয়া চলছে বেড়াবেড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর দে

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৫
Share: Save:

সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’দের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো টাটা প্রকল্পে অধিগৃহীত জমি চাষিদের ফেরানোর জন্য চিহ্নিত করা এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ তো চলছেই। রবিবার থেকে শুরু হল ‘অনিচ্ছুক’দের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়াও। বেড়াবেড়ির পূর্বপাড়ার একটি আইসিডিএস কেন্দ্রে ভূমি দফতরের কর্মীরা ক্যাম্প অফিস খুলে বসেন। সেখান ক্ষতিপূরণের সরকারি আবেদনপত্র বিলি করা হয়। আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে ভিড় জমে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ১০ বছর আগে অধিগ্রহণের সময়ে এখানকার উর্বর জমির জন্য চাষিদের বিঘাপ্রতি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং অতি-উর্বর জমির জন্য ৪ লক্ষ টাকা দাম দেওয়া হয়েছিল। আন্দোলন-পর্বে ২৭২৬ জন চাষি সেই টাকা নেননি। সেই টাকা জমা রয়েছে সরকারি কোষাগারে। ‘অনিচ্ছুক’রা নথিপত্র-সহ ক্ষতিপূরণের আবেদন করলে সরকারি কোষাগার থেকে সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।

হুগলি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “অনিচ্ছুকদের দরখাস্তের পাশাপাশি জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। যাঁদের কাগজে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়বে, সরকারি কর্মীদের পরামর্শ নিয়ে তাঁদের ফের নথি জমা দিতে বলা হবে।”

এত দ্রুত সরকার ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ায় আনন্দের মাত্রা বেড়েছে ‘অনিচ্ছুক’দের। বেড়াবেড়ি পূর্বপাড়ার জয়দেব দাস এ দিন আবেদনপত্র নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাম সরকার জোর করে জমি নিয়েছিল। তাই টাকা নিইনি। এ বার খুশি মনে নেব।’’ খাসেরভেড়ির বিনয় দাসের আড়াই বিঘা জমি গিয়েছে টাটাদের প্রকল্পে। বিনয়বাবুর কথায়, ‘‘আমাদের জয় হয়েছে। আদালত যখন জমির সঙ্গে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তখন আর আপত্তি করব কেন?’’

প্রকল্প এলাকার জমি থেকে আগাছা নির্মূল করার কাজে আরও গতি বাড়িয়েছে প্রশাসন। জমির ছবি তুলতে এ দিন ‘ড্রোন’ ব্যবহার করা হয়। প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, দু’সপ্তাহের মধ্যেই আগাছা তুলে ফেলার কাজ শেষ করা যাবে। কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, আগাছা সরানোর কাজ শেষ হলেই চাষিদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তারপর সেখানে দ্রুত চাষের প্রক্রিয়া শুরু হবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে সিঙ্গুরে আসেন। তিনি বলেন, “কাজের গতি একেবার ঠিক আছে। পরে কংক্রিট সরানোর কাজ শুরু হবে। সিঙ্গুরে মমতার সভার আগেই অনেকটা কাজ এগিয়ে যাবে।”

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সিঙ্গুরে প্রশাসনিক বৈঠক এবং প্রকাশ্য সমাবেশ করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া সানাপাড়াকেই সভাস্থল হিসেবে বাছা হয়েছে। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে মঞ্চ বাঁধার কাজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Govt Compensation Non willing farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE