Advertisement
E-Paper

বিদ্যুৎকর্মী কি ফাঁকি দিচ্ছেন, ধরতে প্রযুক্তি

শুধু কথার পিঠে কথা সাজিয়ে লাগাতার আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়। কাজকর্ম ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তা দেখতে এ বার বাড়তি নজরদারিও। এবং নজর রাখার সেই কাজে সহায় প্রযুক্তি। বিদ্যুৎকর্মীরা হচ্ছে-হবে করে ফাঁকি দিচ্ছেন কি না, প্রযুক্তিই সেটা ধরিয়ে দেবে। গ্রাহকদের চমকে দিয়ে মেরামতি ব্যবস্থার খোলনলচে বদলানোর কথা ঘোষণা করেছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৯

শুধু কথার পিঠে কথা সাজিয়ে লাগাতার আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়। কাজকর্ম ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তা দেখতে এ বার বাড়তি নজরদারিও। এবং নজর রাখার সেই কাজে সহায় প্রযুক্তি। বিদ্যুৎকর্মীরা হচ্ছে-হবে করে ফাঁকি দিচ্ছেন কি না, প্রযুক্তিই সেটা ধরিয়ে দেবে।

গ্রাহকদের চমকে দিয়ে মেরামতি ব্যবস্থার খোলনলচে বদলানোর কথা ঘোষণা করেছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। বলেছে, দিন হোক বা রাত, জেলার শহরাঞ্চলে কোনও রকম বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে দু’ঘণ্টার মধ্যে মেরামতি সেরে ফেলা হবে। আর গ্রামাঞ্চলে খুব বেশি হলে লাগবে তিন ঘণ্টা।

সময়সীমার মধ্যে যাতে সেই কাজ হয়, তা নিশ্চিত করতেই নজরদারিতে মোক্ষম কড়াকড়ি শুরু হচ্ছে। আর সেই জোরদার নজরদারির জন্য বিদ্যুৎকর্মীদের ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগুলিকে আনা হচ্ছে ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ বা জিপিএস-এর আওতায়। বিদ্যুৎ ভবনে বসেই নজরদার সেলের অফিসার-কর্মীরা যাতে ভ্যানগুলির গতিবিধির উপরে নজর রাখতে পারেন, সেটাই দেখবে জিপিএস।

গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম কী?

মোদ্দা কথায় জিপিএস এমন একটি বিশেষ প্রযুক্তি, যার সাহায্যে গাড়ির প্রতি মুহূর্তের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়। কোনও গাড়িতে জিপিএস ডিভাইস লাগানো থাকলে দূরে বসেই সেই গাড়ির গতিবিধির উপরে সম্পূর্ণ নজরদারি চালানো সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার মাধ্যমে একটি বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের সহযোগিতায় জানা যায়, গাড়িটি এই মুহূর্তে কোন রাস্তায় যাচ্ছে, অথবা কোথাও দাঁড়িয়ে আছে কি না। এলাকার নাম, রাস্তা-সহ সবই ভেসে ওঠে মানচিত্রে।

বিদ্যুৎ পরিষেবায় কী ভাবে কাজে লাগতে পারে জিপিএস?

বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, কোনও ভাবে পরিষেবা বিঘ্নিত হলে বিদ্যুৎকর্মীরা যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য ওই সংস্থার প্রায় ৭০০ ভ্যান রয়েছে। বণ্টন সংস্থার অধীনে থাকা ঠিকাদার সংস্থাগুলিই সেই সব ভ্যান পরিচালনা করে। ওই ভ্যানে চেপেই বিদ্যুৎকর্মীরা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং লাইন সারিয়ে ফের পরিষেবা স্বাভাবিক করে দেন। বণ্টন সংস্থার হেল্পলাইনে কোনও অভিযোগ জমা পড়লেই ডকেট নম্বর এবং অভিযোগকারীর ঠিকানা-সহ যাবতীয় তথ্য ফোন বা মেসেজের মাধ্যমে ভ্যানের ম্যানেজারকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরে বিদ্যুৎকর্মীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইন সারিয়ে তোলার কথা।

কিন্তু কথা অনুযায়ী কাজ হয় না অনেক ক্ষেত্রেই। কোনও এক সকালে একটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে হয়তো চারটি অভিযোগ জমা পড়ল। সঙ্গে সঙ্গেই চারটি জায়গায় গিয়ে দ্রুত লাইন সারিয়ে ফেলার কথা বিদ্যুৎকর্মীদের। তেমনই নির্দেশ আছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষের। কিন্তু দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎকর্মীরা সময়মতো নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে পৌঁছন না। নানান অজুহাতে সময় নষ্ট করতে থাকেন। এই মানসিকতায় পরিবর্তন আনতেই জিপিএস-দাওয়াই।

জিপিএস ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে বণ্টন সংস্থার ভ্যানগুলি কোথায়, কখন, কী ভাবে কাজ করছে, বিদ্যুৎ ভবনের ডিসপ্লে বোর্ডে প্রতি মুহূর্তে তার ছবি ফুটে উঠবে। গ্রাহকদের অভিযোগের তালিকার সঙ্গে ভ্যানগুলির গতিবিধি মিলিয়ে দেখতে পারবেন নজরদার সেলের কর্মীরা। যে-ভ্যানের যেখানে যাওয়ার কথা, সেটি সেখানে গিয়েছে কি না, তা জানিয়ে দেবে জিপিএস। প্রয়োজনে ভ্যানের অবস্থান দেখে বিদ্যুৎ ভবন থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। চাওয়া হতে পারে কৈফিয়তও।

এত দিন পরে এমন ব্যবস্থার দরকার পড়ল কেন?

এক শ্রেণির কর্মীর উদাসীনতা, গয়ংগচ্ছ মনোভাব বা ফাঁকি দেওয়ার মানসিকতার দিকে আঙুল তুলছেন বণ্টন সংস্থার কর্তারা। এক কর্তার কথায়, সব কর্মী তো সমান হয় না। অনেক সময়েই অভিযোগ আসে, সময়মতো ভ্যানগুলি ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছে না। কিংবা একটি জায়গায় কাজ করার পরে অন্য যেখানে যাওয়ার কথা, সেখানে হয়তো গেলই না। ইচ্ছেমতো ভ্যান নিয়ে কাজে গেল। এই অভ্যাসেরই পরিবর্তন দরকার। সেই জন্যই কড়া নজরদারি রাখতে জিপিএস ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলে জানান ওই বিদ্যুৎকর্তা।

GPS system electricity wbsedcl install maintenance vans
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy