সাতসকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট খুলে চমকে উঠেছিলেন অনেকে। উপাচার্যের ছবির তলায় লেখা, ‘আমি দুঃখিত।’
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি মঙ্গলবার রাতে পুলিশি নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে নিজের অবস্থান বদলালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী? না। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ওই বয়ান মোটেই উপাচার্যের নয়। ওয়েবসাইট ‘হ্যাক’ করে কেউ ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, তাদের ওয়েবসাইটের একটি পাতায় উপাচার্যের ছবি দিয়ে তাঁর বক্তব্য লেখা থাকে। ওয়েবসাইটের সার্ভারে ঢুকে কেউ সেই বক্তব্য বদল করেছেন। এটিকে ‘হ্যাকিং’ বলেই দাবি করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। এ দিন ওয়েবসাইট হ্যাক করার ঘটনা নজরে আসতেই তড়িঘড়ি ওয়েবসাইট থেকে ওই পাতার ‘লিঙ্কটি’ বন্ধ করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাতে যাদবপুর থানায় অভিযোগও জানানো হয় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদীপকুমার ঘোষ জানান, তাঁদের ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাকে খবর পাঠানো হয়েছে। ওই পাতাটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কাজও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরাই তদন্ত শুরু করেছে। কে বা কারা, কোন জায়গা থেকে এই হ্যাকিং করেছিল, তা দ্রুত চিহ্নিত করা হবে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে পুলিশ ও সাইবার অপরাধ দমন শাখার সাহায্য নেওয়া হবে। এ রকম কাজ কাপুরুষোচিত।”
বস্তুত, যাদবপুরের ঘটনার পর থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এবং হোয়্যাটসঅ্যাপে নানা ধরনের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। অম্বিকেশ মহাপাত্রের সেই ব্যঙ্গচিত্র-কাণ্ড বা কামদুনির ঘটনার পরেও এ ভাবেই প্রতিবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবাদ জানানোর জন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে, এমন ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশের একাংশ বলছেন, অনেক সময় আন্তর্জাতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাক ও চিনা হ্যাকারদের বিরুদ্ধে এ দেশের সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করার অভিযোগ মেলে। কিন্তু যাদবপুরের ঘটনায় তেমন কোনও যোগ নেই। পাশাপাশি, পেশাদার হ্যাকারেরা ঘটনার পরে নিজেরাই তাঁদের জড়িত থাকার কথা ফলাও করে ঘোষণা করেন। সে রকম কিছুও ঘটেনি। তা ছাড়া, এ ক্ষেত্রে যা করা হয়েছে, তার পিছনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। অন্য কোনও ক্ষতিও করা হয়নি। তাই এই ঘটনার পিছনে এ শহরেরই কোনও হ্যাকার জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy