পুরসভার পানীয় জলে নিকাশির জল মিশে যাওয়ার বিষয়টি এখন পরিষ্কার। কিন্তু নিকাশির জল থেকে কোন ধরনের সংক্রমণ পানীয় জলে মিশেছে, তা জানা গেল না। আর সেটা জানা যাবে কিনা, তা-ও পরিষ্কার নয়। পুরসভার সনাক্ত করার পরিকাঠামোই নেই। আর যাদের আছে, সেই স্বাস্থ্য দফতর কারণ খুঁজতে উদ্যোগী হয়নি।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দিয়েছে, তারা আপাতত আক্রান্ত এলাকার মানুষকে জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে এই পর্বে ইতি টানতে চাইছে।
পরজীবী গবেষকেরা বলছেন, কোনও সংক্রমণ হলে তার প্রতিরোধের জন্য কারণ জানা জরুরি। না হলে ওই সংক্রমণ বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংক্রমণের কারণ জানা থাকলে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের প্রাথমিক নিয়মই মানছে না রাজ্য।
স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা জানিয়েছে, আক্রান্ত এলাকার জল থেকে কলিফর্ম পাওয়া গিয়েছে। পরজীবী গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কলিফর্ম সাধারণত ক্ষতিকারক নয়। এটি আসলে কয়েকটি ব্যাক্টিরিয়ায় সম্মিলিত প্রজাতি। যার মধ্যে একটি প্রজাতি হল, ই-কোলাই। যা জলে মিলেছে। সেটা অবশ্য মানুষের দেহেই থাকে। কিন্তু ই-কোলাই ০১৫৭:এইচ ৭ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। পাশাপাশি জলে কলিফর্ম পাওয়ার অর্থ, তাতে নিকাশির জল মিশে যাওয়া। তাই কোন ব্যাক্টিরিয়া, অন্য কোনও ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ জলে রয়েছে কি না, এগুলো জানা জরুরি।
সেই পরীক্ষা কি হয়েছে?
শনিবার কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জলে কলিফর্ম পাওয়ার পরে যে পরীক্ষা করে তার ধরন বোঝা যায়, সেই পরিকাঠামো পুরসভার গবেষণাগারে নেই। তাই সেটা বোঝা যায়নি। পুরকর্তারা অনুমান করেছেন, কলিফর্ম পাওয়া এবং পেটের অসুখ হওয়ার অর্থ, ডায়রিয়াজেনিক ই-কোলাই থাকতে পারে। সেই অনুমানের ভিত্তিতেই বাঘাযতীন, চিত্তরঞ্জন কলোনি, পাটুলি-সহ পুরসভার আটটি ওয়ার্ডের মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
কিন্তু পরীক্ষা না করে কেন অনুমান করা হচ্ছে? পুর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তপনকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জলের আরও গবেষণা করে তবেই এই প্রজাতি ধরা পড়ে। তবে সেটা দেখা পুরসভার কাজ নয়। পুরসভা কমিউনিটি হেলথ দেখে। সেই মতো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়েছে।’’ স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মতো সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের পরীক্ষা করা হয়। সংক্রমণের ধরন বুঝতে গেলে সেখানে জল পাঠিয়ে গবেষণা করাতে হবে বলেই জানান তপনবাবু। তবে, তাঁর কথায়, ‘‘জল পাঠিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের সেই পরীক্ষা চালানোর দায়িত্ব পুরসভার নয়, স্বাস্থ্য দফতরের।’’
এ দিন স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই পরীক্ষায় উদ্যোগী হয়নি তারা। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের এই পরীক্ষা জরুরি নয়। তাই সে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy