মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সরকারি হাসপাতালগুলিকে মানবিক হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে অভিযোগ অন্তহীন। অভিযোগ, কোথাও গুরুতর অসুস্থ বা আহতকে দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হচ্ছে, কোথাও আবার তাঁদের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ঘোরানো হচ্ছে। সময় মতো রক্ত বা অক্সিজেন না দেওয়া অথবা শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে ইমার্জেন্সি থেকে ওটি-তে না পাঠানোর অভিযোগও ভূরি ভূরি।
এ সবের সমাধানে এ বার রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ‘ইমার্জেন্সি আউটডোর’ নামে সম্পূর্ণ নতুন বিভাগ তৈরির পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। আপাতত এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু হচ্ছে এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল এবং আরজিকরে। ধাপে ধাপে তা চালু হবে অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে শুরু করে মহকুমা হাসপাতাল পর্যন্ত। ঠিক হয়েছে, হাসপাতাল চত্বরে আলাদা ভবনে তৈরি হবে এই বিভাগ। থাকবেন আলাদা চিকিৎসক ও কর্মী।
এর সঙ্গে আগামী সপ্তাহ থেকেই এই তিন হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ‘কল বুক’ প্রথা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ইমার্জেন্সিতে এসে রোগীদের ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। মেডিসিন-চেস্ট-সার্জারির মতো কিছু বিভাগের চিকিৎসকদের সব সময়ে ইমার্জেন্সিতে থাকতে হবে।’’
রাজ্য জুড়ে ‘স্টেট অব আর্ট’ ইমার্জেন্সি পরিষেবা চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক ডেকেছিল স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিশেষ উপদেষ্টা কমিটি। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব তথা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য-সচিব তমাল ঘোষের নেতৃত্বে ওই বৈঠকে ছিলেন এসএসকেএম, মেডিক্যাল ও আরজিকরের সুপার, ডেপুটি সুপারেরা এবং মেডিসিন-চেস্ট-সার্জারি-পেডিয়াট্রিক্স-নিউরো সার্জারি-অর্থোপেডিক্সের বিভাগীয় প্রধানেরা। সেখানেই এই নতুন বিভাগ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ‘‘ওই বিভাগে রোগী আসামাত্র তাঁদের স্থিতিশীল করার ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে যাবতীয় পরীক্ষার বন্দোবস্তও। যে বাড়িতে এই নতুন বিভাগ চালু হবে, তার দোতলায় থাকবে ওটি। যাঁদের তৎক্ষণাৎ অস্ত্রোপচার দরকার, তাঁদের যাতে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে না হয়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা।’’