প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে আগাম কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? —ফাইল চিত্র।
রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের প্রস্তুতি কেমন, তা জানতে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার দিল্লিতে ‘ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি’র জরুরি বৈঠক হয়। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার সভাপতিত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে নবান্ন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে আগাম কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত জানান মুখ্যসচিব গোপালিক। নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, জেলাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খুলে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। খাদ্য এবং ওষুধ-সহ সমস্ত জরুরি সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় শিবির। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতেও রাজ্য যে পদক্ষেপ করেছে, তা-ও বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের সময় যাতে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে না যান, সে বিষয়েও জেলা প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। লোকসভা ভোটের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিস্থিতি সামাল দিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই কারণেই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
বঙ্গোপসাগরে শনিবার রাতেই তৈরি হয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এই মুহূর্তে তা গভীর নিম্নচাপ হিসাবে অবস্থান করছে। আলিপুরের হাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে তার অবস্থান পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে। গত ছ’ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়েছে নিম্নচাপ। সাগরদ্বীপ থেকে তা এখন ৩৮০ কিলোমিটার দূরে। ক্যানিং থেকে তা রয়েছে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। দুর্যোগের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও তার বিভিন্ন সংস্থা রাজ্য সরকারের পাশে রয়েছে বলে বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছেন ক্যাবিনেট সচিব। পাশাপাশি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি দলকে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও পাঁচটি দলকে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে। আবহবিদেরা আপাতত সোমবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। উপকূলবর্তী এলাকায় বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কৃষিজমির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। রবিবার রাতে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে। স্থলভাগে প্রবেশের সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের গতি থাকবে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। হাওয়া বইতে পারে ১৩৫ কিলোমিটার বেগেও। ফলে জেলাগুলিতে ভাল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy