পুজোর বয়স ৩০৩ বছর। ডোমজুড়ের বলুহাটি হাটতলা বারোয়ারি সমিতির পুজোয় বাহ্যিক আড়ম্বরের চেয়ে পুজোর রীতিই প্রাধান্য পায় বেশি। বিসর্জনের আগে ঠাকুরকে বরণ করেন পুরুষেরা। জনশ্রুতি, পুজোর শুরু থেকেই এই চল। তবে বর্তমানে পুরুষদের পরে মহিলারাও দেবীকে বরণ করেন। তার পরে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। ডোমজুড়ের আদি পুজোগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
পুজোর উদ্যোক্তাদের অন্যতম দেবকুমার দে জানান, দাদুর কাছে তিনি শুনেছেন, স্থানীয় জমিদার জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় এই পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে প্রায় আড়াইশো বছর আগে পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তখন তৎকালীন সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা পুজোকে বারোয়ারি হিসাবে চালুর পরিকল্পনা করেন। আগেকার দিনে মহিলারা সাধারণত বাড়ির বাইরে বেরোতেন না। তাই দশমীতে দেবীকে বরণ করার কাজপুরুষরাই করতেন। দেবকুমারবলেন, ‘‘আমরা নতুন ধুতি পরে দেবীকে বরণ করি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আগে দেবীবরণের পুরুষদলের প্রধান ছিলেন আমার বাবা। বর্তমানে এই দলের আমিই বয়োঃজ্যেষ্ঠ। প্রথা মেনে আমরা পাঁচ বা সাত জন প্রথমে প্রতিমাকে সাত বার প্রদক্ষিণ করি। তারপরে বরণ।’’
হাওড়া সংস্কৃত সাহিত্য সমাজের প্রধান দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দশমী পূজা শেষে দর্পণে দেবীর বিসর্জনের পরে যা মানা হয়, তা পারিবারিক অথবা স্থানীয় বা আঞ্চলিক রীতি। কোনও শাস্ত্রীয় প্রথা নয়।’’ বারোয়ারির সম্পাদক ত্র্যম্বক সমাদ্দার বলেন, ‘‘আমাদের পুজো হয় বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে। নবমীতে পংক্তিভোজনে প্রায় চার হাজার মানুষ যোগ দেন। দশমীতে সরস্বতী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)