হাওড়ার জগাছায় স্টেশন রোড সংলগ্ন একটি সরু গলির মধ্যে হাওড়া পুরসভার জলের পাইপলাইন থাকা সত্ত্বেও সেখানে আরও একটি পাইপলাইন বসাচ্ছিল কেএমডিএ। পুজোপাঠ করে সেই প্রকল্পের উদ্বোধনও করেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী এবং শিবপুরের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানে পানীয় জলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তা সত্ত্বেও সরু গলির মধ্যে রাস্তা কেটে ফের কেএমডিএ জলের পাইপলাইন বসাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, নতুন জলের সংযোগের জন্য টাকা চেয়ে জুলুমবাজি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। যা নিয়ে সোমবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় জগাছা স্টেশন রোডে। ফলে কেএমডিএ কাজ বন্ধ করে দেয়।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন সাঁতরাগাছি স্টেশন রোডের পাশ দিয়ে যাওয়া একটি সরু গলির মধ্যে প্রায় ৬০-৭০টি পরিবারের বাস। ওই পরিবারগুলির বক্তব্য, এলাকায় পানীয় জলের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কিছু দিন আগে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ওই গলিতে দ্বিতীয় একটি পাইপলাইন বসানোর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কাজও শুরু হয়। তাঁদের অভিযোগ, এ দিন সকালে কয়েক জন যুবক নিজেদের মন্ত্রীর লোক বলে পরিচয় দিয়ে প্রতিটি বাড়ি থেকে পাইপলাইনের সংযোগ দেওয়ার জন্য ২৬০০ টাকা করে দাবি করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এলাকার লোকজন কেএমডিএ-র ওই কাজ বন্ধ করে দেন। এলাকার বাসিন্দা ফেলুরাম মাইতি বলেন, ‘‘আমাদের এই গলিতে পর্যাপ্ত পানীয় জল আসে। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় পাইপলাইন বসানোর প্রয়োজন কী, তা বুঝতে পারলাম না।’’ আর এক বাসিন্দা সুমন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘এই গলিতে চার ইঞ্চির একটি পাইপলাইন বসানো হয়েছে স্থানীয় কেএমডিএ-র পদস্থ কর্তার বাড়িতে জল সরবরাহের জন্য। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, একটি বাড়িতে জল সরবরাহ করতে যে পাইপলাইন বসেছে, তার জন্য আমাদের ২৬০০ টাকা করে দিতে হবে কেন? টাকা না দিলে পুরনো পাইপলাইনেও জল সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হবে কেন?’’
এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনার প্রতিবাদ করে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী ও কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে এ দিন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন জানান, তিনি কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বাসিন্দাদের জানিয়েছেন, পানীয় জল সংযোগের জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না। বাসিন্দাদের থেকে টাকা চাওয়ার বিষয়ে এলাকার বিধায়ক বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ টাকা চায়নি। কেএমডিএ-র কেউ এক জন বাসিন্দাদের টাকার কথা বলেছিলেন বলে শুনছি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)