Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Balagarh

Primary School: কাছেই গঙ্গা, দিন কাটে আশঙ্কায়, বলাগড়ের সেই স্কুল নিয়ে উদ্বিগ্ন হাই কোর্টও

হুগলির জিরাটের চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুলটি নদীর ধারে। স্কুলের পাশের মাটি ক্ষয়ে যাচ্ছে। ৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে ওই স্কুলে।

জিরাটের সেই স্কুল।

জিরাটের সেই স্কুল। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ১৪:২৮
Share: Save:

আগে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে ছিল গঙ্গা। এখন সেই গঙ্গা চলে এসেছে স্কুলের কয়েক ফুটের মধ্যে। হুগলির বলাগড়ের জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সেই চর খয়রামারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করল হাই কোর্টও। বিষয়টি নিয়ে জানতে বুধবার হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন এবং জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।

হুগলির জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের চক খয়রামারি প্রাথমিক স্কুলটি নদীর ধারেই। ফলে স্কুলের পাশের মাটি ক্ষয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলটি। ৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে ওই স্কুলে। এ নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলটির যা অবস্থা ছাত্র এবং শিক্ষকদের জীবন যে কোনও সময় বিপদে পড়তে পারে। আদালত এটা হতে দিতে পারে না।’’ বিচারপতি এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানানোর জন্য বুধবার আদালতে তলব করা হয়েছে হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন এবং জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে। এর পাশাপাশি, ওই বিষয়টি নিয়ে আদালত আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তকে ‘বিশেষ আধিকারিক’ হিসাবে নিয়োগ করেছে।

হাই কোর্ট যে স্কুলটির বিষয়ে জানতে চেয়েছে তা জানার পর, হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন শিল্পা নন্দী বলেন, ‘‘গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর আমি দায়িত্বে এসেছি। তার পরেই স্কুলটি পরিদর্শন করে নতুন জায়গা দেখে সমস্ত ব্যবস্থা করেছি। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। স্কুল হয়ে গেলেই শিশুদের ওখানে স্থানান্তরিত করা হবে। আমরা কাজটা ফেলে রাখিনি। গত ৬ মাসে আর ভাঙন হয়নি। তাড়াতাড়ি স্কুলটা তৈরি করে ফেলতে চাইছি। আমরা নিয়মিত স্কুলটির খবরও নিই। তেমন পরিস্থিতি হলে শিশুদের ওখান থেকে সরানো হবে। আমি সদ্য হাই কোর্টের খবরটা পেয়েছি। এখনও আলোচনার সময় পাইনি।’’

এ নিয়ে জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুচন্দ্রা রায় বলেন, ‘‘স্কুলটি নিয়ে বিডিও এবং এসডিও-কে বার বার জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। স্কুলটি ভাঙন কবলিত এলাকায়। গত দু’বছর ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। অত শিশুকে কী ভাবে কোথায় নিয়ে যাব? আমাদের পঞ্চায়েতেও অত জন শিশুর জায়গা হবে না। আমাদের তরফে কোনও অবহেলা দেখাইনি।’’

যে কোনও সময় স্কুল তলিয়ে যেতে পারে গঙ্গাগর্ভে। এ নিয়ে আতঙ্কে স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই। গোপাল মজুমদার নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘স্কুলটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া উচিত। অনেকেই ভয়ে স্কুল ছেড়ে দিচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা রোজ স্কুলে যায় ঝুঁকি নিয়ে। তারা দোতলার ঘরে ক্লাস করে। এ বিষয়ে ভাবা উচিত প্রশাসনের।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ফ্রেব্রুরারি মাস থেকে স্কুল চালু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দোতলার ঘরে ক্লাস নিচ্ছি। সামনে গঙ্গার জন্য আতঙ্কে আছি। স্কুলে মিড ডে মিল চালু রয়েছে। সরকারের তরফে গঙ্গা বাঁধানো হচ্ছে। কিন্তু তাতে আমাদের আতঙ্ক কাটছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balagarh school High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE