Advertisement
E-Paper

পুজোয় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকার বই বিক্রি সিপিএমের স্টলে

পুজোয় বইয়ের স্টল বামেদের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। মার্ক্সীয় দর্শন, স্বাধীনতার ইতিহাস, অর্থনীতির পাশাপাশি প্রবন্ধ, ছোট গল্পের বইও বিক্রি হয় সিপিএমের স্টলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২ ১০:০৭
পুজোয় বইয়ের স্টল বামেদের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ।

পুজোয় বইয়ের স্টল বামেদের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। মার্ক্সীয় দর্শন, স্বাধীনতার ইতিহাস, অর্থনীতির পাশাপাশি প্রবন্ধ, ছোট গল্পের বইও বিক্রি হয় সিপিএমের স্টলে।

দলের সুদিন ফেরেনি। তবে, দুর্গাপুজোয় বই বিক্রিতে পুরনো দিনের আভাস পাচ্ছে সিপিএম। হাওড়া-হুগলি দুই জেলাতেই পুজোয় তাদের বইয়ের স্টলে বিক্রি বেড়েছে। নেতৃত্বের দাবি, দলের ছাত্র-যুবদের উন্মাদনাও বেড়েছে। এই পরিস্থিতি গত এক দশকে ‘নজিরবিহীন’। আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে তা ‘ইতিবাচক’ বলেই তাঁরা মনে করছেন।

পুজোয় বইয়ের স্টল বামেদের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। মার্ক্সীয় দর্শন, স্বাধীনতার ইতিহাস, অর্থনীতির পাশাপাশি প্রবন্ধ, ছোট গল্পের বইও বিক্রি হয় সিপিএমের স্টলে। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। শাসক দলের চোখরাঙানিতে অনেক জায়গায় স্টল খোলা যায়নি। এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন।

হুগলি জেলা সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, গত দু’বছর করোনার কারণে দুর্গাপুজো কোনও রকমে হয়েছে। বই বিক্রিও তেমন হয়নি। এ বার করোনার বিধিনিষেধ নেই। আগের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে। ২০১৯ সালে হুগলিতে ৬৭টি স্টল হয়েছিল। এ বার হয় ৮৫টি। কিছু বইয়ের চাহিদা ভাল ছিল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা’ নিঃশেষ। সব মিলিয়ে ৭ লক্ষ টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি কোন্নগরে ক্রাইপার রোডের স্টলে। এখানে প্রায় ১ লক্ষ টাকার বই বিকিয়েছে। ’১৯ সালে জেলায় বই বিক্রির অঙ্ক ছিল প্রায় ৫ লক্ষ টাকা।

জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘গোঘাট, খানাকুল-২, দাদপুরে তৃণমূল আমলে এর আগে আমরা স্টল করতে পারিনি। এ বার সেখানেও হয়েছে।’’

সিপিএম জানিয়েছে, আরামবাগ মহকুমার পুরশুড়া, খানাকুল-১ ও ২ ব্লকে দু’টি করে, গোঘাট এবং‌ আরামবাগে একটি করে স্টল হয়েছিল। মোট ২৯ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বলাগড় ব্লকে জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের স্টলে ৪ দিনে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে। ’১৯ সালে এই অঙ্ক ছিল ৮৩০০ টাকা। দলের উত্তরপাড়া এরিয়া কমিটির সদস্য সলিল দত্ত বলেন, ‘‘উত্তরপাড়া, মাখলা মিলিয়ে ছ’টি স্টলে টাকার অঙ্কে বিক্রির হার প্রায় দ্বিগুণ। ৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি বিক্রি হয়েছে।’’ বৈদ্যবাটীর মোট ছ’জায়গায় স্টল হয়েছিল। দলের বৈদ্যবাটী এরিয়া কমিটি অন্যতম সদস্য অবনী ভট্টাচার্য জানান, মোট প্রায় ৪০ হাজার টাকার বই বিক্রির হয়েছে। অষ্টমীর দিন সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি না হলে এই টাকার অঙ্কটা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেত বলে তাঁর দাবি।

এক সময়ের শক্ত ঘাঁটি হাওড়াতেও পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, পুরসভা সিপিএমের হাতে নেই। বিধায়ক-সাংসদও নেই। পুজোয় এই জেলায় সিপিএমের স্টলে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। জেলা সিপিএম সম্পাদক দিলীপ ঘোষ জানান, প্রায় ৯৫টি স্টল ছিল। বহু সাধারণ মানুষ বই ঘেঁটে দেখেন, কিনেছেন। দলের বহু পুরনো কর্মীরাও এসেছেন। তৃণমূলের শাসানির ভয়ে যে কর্মীরা বসে গিয়েছিলেন, তাঁরা স্টলে এসেছেন। নতুন করে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কমবয়সি ছেলেমেয়েদের ভিড়ও ছিল। স্টলে ছাত্র-যুবরা গান গেয়েছেন, আবৃত্তি করেছেন। কিছু জায়গায় এসএফআই, ডিওয়াইএফ এবং মহিলা সমিতি মিলেও স্টল দিয়েছিল। দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘দল ধীরে ধীরে পুরনো অবস্থায় ফিরছে। যাঁরা ভুল বুঝে বা শাসকের ভয়ে চলে গিয়েছিলেন, তারা ফিরছেন।’’

বিষয়টি অবশ্য কার্যত হালকা ভাবে নিচ্ছে শাসকদল তৃমমূল। পরিবহণ মন্ত্রী তথা দলের মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওদের বই বিক্রি হচ্ছে, ভাল। দুর্বল বিরোধীর থেকে শক্তিশালী বিরোধী দল ভাল। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার না করে ইতিবাচক বিরোধিতা করতে হবে। না হলে, শূন্য কখনও এক হবে না।’’

CPIM Book Stall Durga Puja 2022
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy