E-Paper

বাসিন্দাদের সরিয়ে বহুতলের বেআইনি অংশ ভাঙার কাজ শুরু হাওড়ায়

পুরসভা সূত্রের খবর, বহুতলের বেআইনি অংশে বসবাসকারীদের সরিয়ে দিয়ে এই ভাবে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ঘটনা হাওড়া শহরে প্রথম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৬
তৎপরতা: বহুতলের বেআইনি অংশ ভাঙার কাজ চলছে। সোমবার, মধ্য হাওড়ার কালী ব্যানার্জি লেনে।

তৎপরতা: বহুতলের বেআইনি অংশ ভাঙার কাজ চলছে। সোমবার, মধ্য হাওড়ার কালী ব্যানার্জি লেনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে একটি ছ’তলা বহুতলের বেআইনি অংশের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে সেটি ভাঙার কাজ শুরু করল হাওড়া পুরসভা। পুরসভার বক্তব্য, দু’বছর ধরে ওই কাজ আটকে ছিল। ২০২২ সাল থেকে পুরসভার অনুমোদিত নকশার বাইরে নির্মাণ করা আরও দু’টি তলা আদালতের নির্দেশে ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা বাধা দেওয়ায় এবং নির্মাণকারীরা আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ফের কোর্টে যাওয়ায় সেই কাজ স্থগিত হয়ে গিয়েছে। শেষে অন্য একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশ দেয়, অবৈধ অংশ ভাঙার আগে ফ্ল্যাটমালিকদের নোটিস দিতে হবে। তার পরেই বেআইনি অংশ ভাঙতে হবে। পুরসভার দাবি, সেই মতো নোটিস দিয়ে সোমবার ভাঙার কাজ শুরু করে তাদের ‘ডেমোলিশন স্কোয়াড’। পুরসভা সূত্রের খবর, বহুতলের বেআইনি অংশে বসবাসকারীদের সরিয়ে দিয়ে এই ভাবে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ঘটনা হাওড়া শহরে প্রথম।

পুরসভা সূত্রের খবর, মধ্য হাওড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালী ব্যানার্জি লেনে একটি ছ’তলা বহুতল তৈরি করা হয়েছিল। পরে পুরসভার কাছে ওই বহুতলেরই এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, সেটির দু’টি তলা সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এই অভিযোগ পেয়েই পুর কর্তৃপক্ষ ওই বহুতলের নকশা পরীক্ষা করে জানতে পারেন, সেটির নকশায় চারতলা পর্যন্ত অনুমোদন দিয়েছিল পুর বিল্ডিং বিভাগ। বাকি দু’টি তলা বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছে।

পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক পদস্থ কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘বহুতলটির বেআইনি অংশ তৈরির সময়েই কাজ বন্ধ করার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, পুরসভা নিজে থেকে বেআইনি অংশ ভেঙে দেবে, সেই মর্মেও নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু কোনওটিতেই কর্ণপাত করেননি প্রোমোটারেরা। পুরসভা ওই বেআইনি অংশ ভাঙতে গেলে বার বার বাধা দেওয়া হয়।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০২২ সালে থেকে তিন বার বহুতলটির ওই বেআইনি অংশ ভাঙার চেষ্টা হয়। কিছুটা ভেঙেও দেওয়া হয়। কিন্তু বহুতলটির প্রোমোটারেরা সেই ভাঙা অংশ মেরামত করে ফের বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে ওই বহুতলের এক বাসিন্দা মামলা করলে আদালত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। সেই সময়ে তা ভাঙতে গেলে পুরসভার ডেমোলিশন স্কোয়াডকে বাধার মুখে পড়তে হয়।
পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ দিন তাই বিশাল পুলিশ বাহিনী সঙ্গে নিয়ে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের পদস্থ অফিসারেরা ঘটনাস্থলে যান এবং ভাঙার কাজ শুরু করেন। এই নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ালেও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।

এ দিকে, বহুতলের বেআইনি দু’টি তলা ভাঙার কাজ শুরু হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই ফ্ল্যাটগুলির বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রোমোটারেরা তাঁদের ভুল বুঝিয়ে ওই ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। এখন তাঁরা যাবেন কোথায়?
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুর্ঘটনায় কেউ গৃহহীন হলে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার পরে সেখানকার বসবাসকারীদের ক্ষেত্রে কী করা হবে, সেই আইন পুরসভার কাছে নেই।’’ তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ক্ষেত্রে প্রেমোটারের বিরুদ্ধে কী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Construction Howrah Demolition

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy