যানজট মোকাবিলায় উলুবেড়িয়া শহরে একসঙ্গে সব অটো এবং টোটো রাস্তায় না নামানোর পরিকল্পনার কথা শোনানো হয়েছিল। কিন্তু উলুবেড়িয়া পুরসভার সেই ভাবনা আপাতত ঠান্ডা ঘরে! অটো-টোটোর দাপাদাপি অব্যাহত। যানজটের কারণে মানুষের ভোগান্তিও চলছেই।
পুরপ্রধান অভয়কুমার দাসের অবশ্য দাবি, পরিকল্পনা বাতিল হয়নি। তবে, দেরি কিসে? পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘শহরের সৌন্দর্যায়ন এবং রাস্তা চওড়া করার কাজ চলছে। সেই সব কাজ হয়ে গেলেই অটো-টোটো নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে।’’
গত কয়েক বছর ধরে এ শহরে টোটোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যাত্রী তোলা-নামানোর জন্য রাস্তায় যত্রতত্র দাঁড়ায় অটো-টোটো। নিয়ম-কানুনের বালাই নেই। এতে যেমন গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হয়, পথচারীরাও প্রাণান্তকর পরিস্থিতিতে পড়েন। গরুহাটা মোড়, হাসপাতাল মোড় ইত্যাদি জায়গায় পরিস্থিতি দুর্বিষহ। বাসিন্দাদের তরফে অটো-টোটো নিয়ন্ত্রণের জন্য বার বার পুরসভায় আবেদন করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত অগস্ট মাসের গোড়ায় এ ব্যাপারে পরিকল্পনা করেন পুর-কর্তৃপক্ষ। দিল্লিতে যানজট নিয়ন্ত্রণে জোড়-বিজোড় নম্বরের গাড়ি চিহ্নিত করার কায়দায় ঠিক করা হয়, অটো এবং টোটোকে বিভিন্ন রঙের প্লেট দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট রঙের অটো বা টোটো চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। পুরসভার বক্তব্য ছিল, এর ফলে একসঙ্গে সব অটো এবং টোটো রাস্তায় নামবে না। সবাই নির্দিষ্ট সময়ে চলতেও পারবে, আবার সংখ্যায় কম হওয়ায় যানজট কমবে। নিস্তার পাবেন মানুষ। যান শাসনে শৃঙ্খলা ফিরবে।
গত ২০ অগস্ট অটো এবং টোটো চালকদের নিয়ে পুরসভা ও পুলিশের বৈঠকে পরিকল্পনার খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হয়। ঠিক হয়, পুজোর পরেই পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। হয়নি। ফলে, অবস্থা তথৈবচ। পুরসভারই একটি সূত্রের খবর, অটো এবং টোটো চালকদের একটি বড় অংশের আপত্তিতেই পিছিয়ে এসেছে পুরসভা।
পিছিয়ে আসার কথা স্বীকার করেননি পুরসভার কোনও কর্তা। উপ-পুরপ্রধান ইনামুর রহমান বলেন, ‘‘গঙ্গারামপুর থেকে কালীবাড়ি পর্যন্ত ওটি রোডের দুই ধার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। গঙ্গারামপুর থেকে জেটিঘাট পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকে হাই মাস্ট আলো দেওয়া হচ্ছে। গঙ্গারামপুর মোড়ে ওটি রোডে সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে। পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়ের উদ্যোগে এই সব কাজ চলছে। ফলে, অটো-টোটো নিয়ে পরিকল্পনা রূপায়ণে কিছুটা সময় লাগছে।’’
আর কতটা সময় গড়াবে, প্রশ্ন ঘুরছে উলুবেড়িয়ার পথে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)