Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Dengue

Dengue cases Howrah : ডেঙ্গি বাড়লেও অভাব সচেতনতার, বুধবার বিশেষ বৈঠক হাওড়ায়

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বছরও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের যে সক্রিয়তা চোখে পড়েছিল, এ বার তা অনেকটাই কম।

হুতল তৈরির জন্য স্তম্ভ তৈরি করতে খোঁড়া বিশাল বিশাল গর্তেও দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে জল।

হুতল তৈরির জন্য স্তম্ভ তৈরি করতে খোঁড়া বিশাল বিশাল গর্তেও দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে জল। প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৯
Share: Save:

রাস্তার দু’পাশে পড়ে রয়েছে স্তূপীকৃত বালি ও পাথরকুচির মতো নির্মাণ সামগ্রী। সেগুলির ফাঁকে ফাঁকে বৃষ্টির জল জমে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। একটি বহুতল তৈরির জন্য স্তম্ভ তৈরি করতে খোঁড়া বিশাল বিশাল গর্তেও দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে জল। একটি বাড়ির নীচে ভাঙাচোরা বালতির ভিতরে জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা।

এটাই হল হাওড়া পুরসভার ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিয়ালডাঙা কালীতলা এলাকার প্রতিদিনের চিত্র। ওই এলাকায় গত সাত দিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট পাঁচ জন। মারা গিয়েছেন এক জন। এখন সঙ্কটজনক অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক জন। পুরসভার দাবি, ওই এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ কমাতে সাফাই বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মিত লার্ভিসাইড স্প্রে করা হচ্ছে। জঞ্জালও পরিষ্কার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এলাকার মানুষকে ডেঙ্গি রুখতে কী কী করতে হবে, তার পাঠ দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত।

কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি যে বদলায়নি, মঙ্গলবারই ওই এলাকায় গিয়ে তা মালুম হয়েছে। এক জনের মৃত্যুর পরেও এলাকার মানুষ যে বিন্দুমাত্র সতর্ক হননি, তা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রী এবং বাড়ির স্তম্ভ তৈরির জন্য খোঁড়া গর্তে জমা জলই প্রমাণ করে দিয়েছে। রিনা সাঁতরা নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সারা দিন ধরে মশার উৎপাতে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। এখানে ডেঙ্গিতে এক জন মারা যাওয়ার পরে পুরসভা থেকে কয়েক দিন লোকজন এসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু মশার উৎপাত তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি।’’

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বছরও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের যে সক্রিয়তা চোখে পড়েছিল, এ বার তা অনেকটাই কম। পুরকর্তারাও এ কথা মানছেন। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হবে। এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করতে কী কী করণীয়, তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় গত আট মাসে মোট ২০৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে গত তিন সপ্তাহেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন। ডেঙ্গি সব থেকে বেশি হচ্ছে ১, ৪, ১১ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এর মধ্যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে ১১ জন আক্রান্ত হন।

পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, ডেঙ্গি পরিস্থিতি দেখতে সোমবারই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে পদস্থ কর্তাদের নেতৃ্ত্বে একটি দল জেলা প্রশাসন ও পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়েছে, প্রতি ১৫ দিন অন্তর এক জন বিশেষ চিকিৎসকের নেতৃত্বে একটি দল হাওড়ায় এসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে রাতে যে সব রেজিস্টার্ড মেডিক্যাল অফিসার বা আরএমও থাকেন, তাঁদের একাংশ এমবিবিএস পাশ নন। আয়ুষ পাশ করা চিকিৎসকেরাও ডেঙ্গির চিকিৎসা করছেন বলে অভিযোগ। তাই ঠিক হয়েছে, এমন ১৫টি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের আরএমও-দের নিয়ে ডেঙ্গি চিকিৎসার শিবির হবে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘সেই সঙ্গে বুধবার বালি ও হাওড়ার ৬০-৭০ জন চিকিৎসককে নিয়ে শরৎ সদনে বৈঠক ডাকা হয়েছে পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Howrah Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE