Advertisement
০২ মে ২০২৪
Howrah

চাষের জন্য কাটা হল বাঁধ, ভেস্তে গেল সেতুর কাজ

২০২০ সালে বন্যায় উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লকে মজা দামোদরের বেশ কয়েকটি কাঠের সাঁকো ভেসে যায়। ফলে দুই ব্লকের মানুষের একটি বড় অংশ বিপাকে পড়েন।

জলের তোড়ে সেতুর ভিত তৈরির কাজ পণ্ড।

জলের তোড়ে সেতুর ভিত তৈরির কাজ পণ্ড। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়পুর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৭
Share: Save:

মজা দামোদরে আড়াআড়ি (ক্রস) বাঁধ দিয়ে জল আটকে সেতু তৈরির কাজ চলছিল। বোরো ধান চাষে জলের প্রয়োজনে চাষিদের একাংশ সেই ‘ক্রস’ বাঁধ কেটে দেন বলে অভিযোগ। ফলে সেতু তৈরির কাজ ভেস্তে গেল। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জয়পুরের ঝামটিয়ায়।

কাজটি হচ্ছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায়। এই প্রকল্পের তত্বাবধানে থাকা সেচ দফতরের এক পদস্থ বাস্তুকার বলেন, ‘‘সমস্যাটি গুরুতর।’’ তাঁর দাবি, গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই ‘ক্রস’ বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল, আজ, বুধবার বাঁধ কেটে
দেওয়া হবে। তার আগেই গ্রামবাসীরা তা কেটে দেওয়ায়, সেতুর কাজ ভেস্তে গিয়েছে। পরবর্তী করণীয় স্থির করতে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নেবেন। ওই আধিকারিকের খেদ, ‘‘ওঁরা আর একটা দিন অপেক্ষা করলেন না!’’ সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি, কাজ যে শুধু ভেস্তে গেল তাই নয়, প্রচুর টাকা জলে গেল।

২০২০ সালে বন্যায় উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লকে মজা দামোদরের বেশ কয়েকটি কাঠের সাঁকো ভেসে যায়। ফলে দুই ব্লকের মানুষের একটি বড় অংশ বিপাকে পড়েন। সেচ দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, সাঁকোগুলির বদলে লোহার সেতু বানানো হবে। আমতা ২ ব্লকে এমন পাঁচটি সেতুর পরিকল্পনা করা হয়। প্রত্যেকটি জন্য খরচ ধরা হয় প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। ঝামটিয়ায় কয়েক দিন আগে সেতুর কাজ শুরু হয়। সেতুর ভিত ঢালাইয়ের জন্য মজা দামোদরে ‘ক্রস’ বাঁধ দিয়ে জল আটকানো হয়। মঙ্গলবার ভিত ঢালাই হয়।

সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ঢালাইয়ের কাজ চলাকালীন গ্রামবাসীদের একাংশ ‘ক্রস’ বাঁধ কেটে দেন। যতটুকু অংশ ঢালাই হয়েছিল, জলের তোড়ে তা ভেসে যায়। ঠিকা সংস্থার কর্মীরা কাজ বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে চলে যান। দুপুরে আমতা সেচ দফতরের কার্যালয়ে এই পাঁচটি সেতু তৈরির কাজে নিযুক্ত ঠিকা সংস্থাগুলির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই পরিস্থিতিতে ওই কাজ করা যাবে না।

সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, নানা কারনে সেতুগুলির কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকা সংস্থার তরফে মৌখিক ভাবে কাজ না করার কথাও জানানো হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, বেশ কিছু দিন ধরে নদীতে ক্রস বাঁধ দিয়ে রাখায় বোরো চাষের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ক্ষুব্ধ হয়েই চাষিদের কেউ কেউ ওই বাঁধ কেটে দেন।’’ আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE