E-Paper

সারের কালোবাজারি রুখতে নজরদারিতে জোর, হচ্ছে শোকজ়ও

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সার সংক্রান্ত ধারাবহিক পরিদর্শনে এখনও পর্যন্ত কাউকে সাসপেন্ড না করা হলেও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে শোকজ় করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৫:৪৮
কালোবাজারি রুখতে বিভিন্ন রাসায়নিক সারের দোকান ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

কালোবাজারি রুখতে বিভিন্ন রাসায়নিক সারের দোকান ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। বুধবার গোঘাটের চাতরায়। নিজস্ব চিত্র

আলু চাষে সারের কালোবাজারি হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠে গিয়েছে। তা ঠেকাতে হুগলিতে প্রশাসনিক ভাবে পরিদর্শন এবং নজরদারিতে জোর বাড়ানো হল। ইতিমধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে শোকজ়ও করা হয়েছে। একইসঙ্গে চাষিরা যাতে বিশেষ একটি সারের (এনপিকে ১০:২৬:২৬) পরিবর্তে বিকল্প সার ব্যবহার করেন, তারও প্রচার চলছে জোরকদমে।

জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) প্রিয়লাল মৃধা বলেন, “সারের কালোবাজারি যাতে না হয়, তা নিয়ে আমরা সর্বতো ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। নিয়মিত পরিদর্শন এবং নজরদারি চলছে। সার নিয়ন্ত্রণ আইনের বাইরে গেলেই কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আর ১০:২৬:২৬ সারের বিকল্প সার ব্যবহারে মাইক প্রচার, লিফলেট বিলি এবং সব সারের দোকানে ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে।”

বুধবার গোঘাট ১ ব্লক এলাকায় এ রকমই এক পরিদর্শনে গিয়ে চাতরার দুই ব্যবসায়ীকে শোকজ় করা হল প্রশাসনের তরফে। পরিদর্শন দলে জেলা, মহকুমা এবং ব্লক কৃষি আধিকারিকরা ছাড়াও ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অমিতেন্দু পাল এবং মহকুমাশাসক (আরামবাগ) সুভাষিণী ই।

জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা জানান, চাতরার দুই সার ব্যবসায়ী সমীরণ দে এবং সঞ্জয় মণ্ডলের খাতাপত্র ঠিক না-থাকা এবং মজুত সার ও তার দাম সংক্রান্ত কোনও বোর্ড না থাকাতেই কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। সমীরণ বলেন, “নিজের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়ম মেনে চলব বলে ব্লক কৃষি দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছি।’’ সঞ্জয়ের পক্ষে তাঁর ভাই ধনঞ্জয় বলেন, “আমরাদামের তালিকা লেখার বোর্ড করাতে দিয়েছি। কোনও ত্রুটি থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছি।”

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সার সংক্রান্ত ধারাবহিক পরিদর্শনে এখনও পর্যন্ত কাউকে সাসপেন্ড না করা হলেও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে শোকজ় করা হয়েছে। সরাসরি কালোবাজারির লিখিত অভিযোগ বা ওই সংক্রান্ত প্রমাণ মেলেনি। সার সংক্রান্ত আইন মোতাবেক চাষিরা যাতে সঠিক সময়ে, সঠিক মূল্য এবং সঠিক মানের মাল পান তা নিশ্চিত করতে আগেই ব্লক, মহকুমা এবং জেলা স্তরের আধিকারিক ও প্রতিনিধিদের নিয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। পঞ্চায়ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়েও নিয়মিত মিটিং এবং পরিদর্শন করা হচ্ছে বলে জানান জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন)।

উপ-কৃষি অধিকর্তা আরও জানান, ইতিমধ্যেই চাষিরা ৮০ শতাংশ সার সংগ্রহ করে ফেলেছেন। ১০:২৬:২৬ সারের ঘাটতি থাকলেও বিকল্প সার মজুত রয়েছে জেলার চাহিদার চয়ে প্রায় ২০০ গুণ বেশি। কেন্দ্রীয় সরকার ১০:২৬:২৬ প্রয়োজন মতো সরবরাহ করছে না। তা নিয়ে রাজ্য স্তর থেকে চিঠি দিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। চাষিরা সমস্যার কথা ক্রমশ বুঝছেন।

বেশ কিছু সার ব্যবসায়ীদের শোকজ় করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন জেলার সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘হুগলি জেলা কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র সম্পাদক সন্দীপ চক্রবর্তী। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ত্রুটি নেই দাবি করে তিনি জানান, চাষিদের আঙুলের ছাপ সব সময় মেলে না। কিন্তু চাষি যাতে সঠিক সময়ে মাল পান, তাঁদের নাম-ঠিকানা লিখে সার দিয়ে দিতে হয়। পরে তাঁদের আঙুলের ছাপ মেলাতে ডাকলে দ্বিতীয় বার আর আসেন না। ফলে, সব চাষির তথ্য নিখুঁত ভাবে রাখা যায় না। সন্দীপ বলেন, ‘‘নেট সংযোগ বা অন্য কোনও কারণে পশ-মেশিনে সব কাজ সঠিক ভাবে না হওয়াতেই নানা বিভ্রাট হচ্ছে। তার জেরেই ভুগতে হচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Arambagh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy