Advertisement
E-Paper

Athlete: যদি চলনসই একটা চাকরিও জুটত, আক্ষেপ পদকজয়ী বুল্টির

মাসখানেক ধরে অনেকেই বুল্টির পাড়ার খোঁজ করছেন তারকেশ্বর স্টেশনে নেমে। সেই খোঁজ সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো’র দৌলতে আরও বেড়েছে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ০৭:২১
প্রাপ্তি: পদক দেখাচ্ছেন বুল্টি (বাঁ দিকে) প্রতিযোগিতার সময়। নিজস্ব চিত্র

প্রাপ্তি: পদক দেখাচ্ছেন বুল্টি (বাঁ দিকে) প্রতিযোগিতার সময়। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে টিভি ছিল না। ছোটবেলায় পড়শি-বাড়ির টিভিতে জ্যোতির্ময়ী শিকদারের দৌড় লুকিয়ে দেখেছিলেন উনি। সে দিনের বালিকা এখন আদ্যোপান্ত বধূ। দুই ছেলেমেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে সংসার। সংসারের হার্ডলসে যিনি প্রায়ই আটকে যা‌ন। কিন্তু, সবুজ ঘাসে তিনি অপ্রতিরোধ্য। সম্প্রতি চেন্নাইতে জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় নেমে তারকেশ্বরের বুল্টি রায় ঝুলিতে ভরে এনেছেন তিনটি সোনা আর দু’টি রুপোর পদক। জয়কৃষ্ণ বাজারের কাছে তাঁর ভাড়াবাড়ির স্যাঁতসেঁতে ঘরে এখন খুশির ঝিলিক।

মাসখানেক ধরে অনেকেই বুল্টির পাড়ার খোঁজ করছেন তারকেশ্বর স্টেশনে নেমে। সেই খোঁজ সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো’র দৌলতে আরও বেড়েছে।

জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুরের রাইপুর গ্রামে বুল্টির বাপের বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই দৌড়ের নেশা। জাঙ্গিপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী পাড়ার বহু ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছেন। মেয়ের এমন দৌড়, প্রথম হওয়া কে রোখে? জাঙ্গিপাড়া থেকেই তারকেশ্বরের প্রশিক্ষক শিবুপ্রসাদ ধারার কাছে নিত্য আনাগোনা দৌড়ের অনুশীলনের জন্য। বুল্টির কথায়, ‘‘স্যর প্রায় আট বছর ধরে অসুস্থ। আমি নিয়মিত তারকেশ্বর বয়েজ় হাইস্কুল মাঠে দৌড়ই। বলতে পারেন, এখন আমি নিজেই নিজের কোচ। স্যরের থেকে যেটুকু শিখেছি, তা-ই ঘষামাজা করি নিয়ম করে।’’

চেন্নাইয়ে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া মাস্টার্স প্রতিযোগিতায় দৌড়ে তিনি ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছেন। রিলে রেসে দু’টি রুপো। সাফল্যের কথা বলতে বলতেই কিছুটা উদাস হয়ে যান তিনি। বলেন, ‘‘আমি সব কিছু ভুলে দৌড়লে কী হবে? দারিদ্র আমাকে তাড়া করে।’’ স্বামী সন্তোষ ট্রেনে ফল বেচেন। কখনও পেয়ারা, কখনও শসা। দিনে মেরেকেটে দু’শো-আড়াইশো টাকা রোজগার। বুল্টির আক্ষেপ, ‘‘স্বামীর এই রোজগার। ভাড়াবাড়িতে থাকি। দুই ছেলেমেয়ে পড়াশোনায় ভাল। কিন্তু টাকার অভাবে মাস্টার দিতে পারি না। স্পোর্টসে টিকে থাকার মতো খাবার, পোশাক, সরঞ্জাম কিছুই জোগাড় করতে পারি না। ছোটার জন্য একটা ভাল জুতো পর্যন্ত আমার নেই।’’

এ বার কিছুটা অনুনয়ের ভঙ্গিতে অ্যাথলিট বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার চলনসই একটা চাকরি যদি দিত আমায়, আর পিছনে তাকাতাম না। নিজের দৌড় বজায় থাকত। ছেলেমেয়েকে মনের মতো করে তৈরি করতে পারতাম।’’

শত অভাবেও স্বপ্নের সলতে পাকাতে থাকেন বুল্টি। তাঁর দৌড়ের থেকেও স্বপ্ন যেন আগে ছোটে!

Athlete Chennai gold medal Silver Medal tarakeswar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy