E-Paper

মহাষ্টমীতে প্রথা মেনেই বেলুড় মঠে কুমারী পুজো

চিরাচরিত রীতিনীতি মেনে মঙ্গলবার দুর্গা-অষ্টমীর সকালে লাল বেনারসি, স্বর্ণলঙ্কার, পায়ে লাল আলতা পরিয়ে কুমারীকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বেলুড় মঠের মূল মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১১:০৯
কুমারী পুজো।

কুমারী পুজো। ছবি: রামকৃষ্ণ মিশন-এর ওয়েবসাইট সূত্রে প্রাপ্ত।

কুমারী দেবী ভগবতীর অতি সাত্ত্বিক রূপ। অর্থাৎ সাধকের শুদ্ধ মনে দেবী ওই রূপেও দেখা দেন। অন্য অর্থে, সাধকের শুদ্ধ চৈতন্যেই কুমারীর দেবীত্ব ধরা পড়ে, মানবীয় স্থূল দৃষ্টি সেখানে অন্তর্হিত। সেই কারণেই শ্রীরামকৃষ্ণও কুমারীকে ভগবতীর অংশ বলেছেন। সেই সূত্র ধরেই স্বামী বিবেকানন্দের হাত ধরে শুরু হওয়া বেলুড় মঠের দুর্গা পুজোয় এ বারও সাড়ম্বরে আয়োজন করা হয়েছিল কুমারী পুজোর।

চিরাচরিত রীতিনীতি মেনে মঙ্গলবার দুর্গা-অষ্টমীর সকালে লাল বেনারসি, স্বর্ণলঙ্কার, পায়ে লাল আলতা পরিয়ে কুমারীকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বেলুড় মঠের মূল মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে। সেখানে দর্শনের পরে কুমারীকে কোলে নিয়ে, মাথায় ছাতা ধরে পুজোর মণ্ডপে আসেন মঠের স্বেচ্ছাসেবকেরা। মূল মন্দিরের চাতাল ও মণ্ডপে বসে থাকা ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উলুধ্বনিতে তখন চারিদিক মুখরিত। মূল মন্দির সংলগ্ন মাঠের অস্থায়ী মণ্ডপে দুর্গা প্রতিমার সামনে বসানো হয় কুমারীকে। নির্ঘণ্ট মেনে ঠিক সকাল ৯টায় শুরু হয় কুমারী পুজো। কুমারীর মাথায় ফুলের মুকুট, গলায় রজনীগন্ধার মালা ও হাতে দেওয়া হয়েছিল পদ্ম।

বেলুড় মঠ সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বছর কুমারী হয়েছিল লক্ষ্মীজনার্দন মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী মুখোপাধ্যায়ের ৫ বছর ২ মাস বয়সের কন্যা শ্রীণিকা মুখোপাধ্যায়। হুগলির বাসিন্দা শ্রীণিকা লোয়ার-কেজির পড়ুয়া। এ দিন কুমারী পুজো দেখতে উপস্থিত ছিলেন মঠ ও মিশনের প্রবীণ সন্ন্যাসীরাও। তন্ত্রসারে বলা রয়েছে, এক থেকে ষোলো বছর পর্যন্ত বালিকাদের কুমারী পুজোর জন্য নির্বাচিত করা যেতে পারে। বিভিন্ন বয়সের কুমারীদের এক-এক রকমের নামে পুজো করা হয়। সেই সূত্র ধরে, এ বছর বেলুড় মঠের কুমারীকে ‘উমা’ রূপে পুজো করা হয়।

সকাল সাড়ে ৯টায় পুজোর শেষে কুমারীকে চেয়ারে বসানো অবস্থাতেই মঠের সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা তুলে নিয়ে প্রথমে যান বেলুড় মঠের কার্যালয় চত্বরের পুরনো মন্দিরে। কুমারীর দর্শন পাওয়ার জন্য নীচে তখন অগণিত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড়। পুরনো মন্দিরের দোতলার বারান্দা থেকে অপেক্ষারত দর্শনার্থীদের দেখানো হয় কুমারীকে। এর পরে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্য দিয়ে গাড়িতে চাপিয়ে কুমারীকে বাড়ির পথে রওনা করানো হয়।

এ দিন কুমারী পুজো দেখতে ভোর থেকেই বেলুড় মঠে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য দর্শনার্থী। দুপুরের দিকে বৃষ্টি নামলেও তাতে ভাটা পড়েনি। বরং ছাতা মাথায় দিয়েই দর্শনার্থীরা প্রতিমা দর্শন করেছেন। পুজো দেখার পাশাপাশি, এ দিন মঠ থেকে প্রসাদও গ্রহণ করেছেন অসংখ্য দর্শনার্থী।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Ramkrishna mission

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy