এক সময়ে রিষড়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারবাতির কাছে টিসি মুখার্জি স্ট্রিটে পার্ক ছিল বলে এলাকাবাসীর দাবি। বর্তমানে সেই জায়গা গাড়ির গ্যারাজে পরিণত হয়েছে এবং চৌহদ্দির একাংশে পুরসভার আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পার্ক ফেরানোর দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। তার প্রেক্ষিতে ওই জায়গায় পার্ক ছিল কি না, জমির রেকর্ড, বর্তমান পরিস্থিতি অনুসন্ধান করতে হুগলি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
জেলাশাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির প্রতিনিধিরা সরেজমিনে অনুসন্ধান করলেন। মহকুমাশাসকের কার্যালয় সূত্রের বক্তব্য, অনুসন্ধানের রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই জমি জনস্বার্থেই ব্যবহার করা হবে। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবনাচিন্তা রয়েছে। পুরসভা সেখানে কাউকে গ্যারাজ করার বা আবর্জনা ফেলার অনুমতি দেয়নি। পুরসভার তরফেও কোনও আবর্জনা ফেলা হয় না। এ বার থেকে কেউ সেখানে আবর্জনা ফেললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলাকারী সন্দীপন খানের দাবি, আগে ওই জায়গায় ডোবা ছিল। বাম আমলে সেটি বুজে যায়। সেই সময়েই পুরসভার উদ্যোগে সেখানে পার্ক করা হয়। পার্কটিতে এক সময় দোলনা-সহ বাচ্চাদের খেলার নানা সরঞ্জাম ছিল। ছোটদের পাশাপাশি বয়স্করাও সময় কাটাতেন।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, কয়েক বছর আগে প্রথমে ওই জমির সীমানা-প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়। পার্কটি কার্যত নষ্ট করে ফেলা হয়। গাড়ি রাখার গ্যারাজ, আবর্জনা ফেলার জায়গা হয়ে যায় পার্ক। এখন শুধুমাত্র একটি ‘স্লিপ’ রয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসীর আরও বক্তব্য, জায়গাটির পূর্ব দিকে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে ২০১০ সাল থেকে। আবর্জনা ফেলায় এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে।
মামলায় পুরসভার তরফে আদালতে বলা হয়, সেখানে আদৌ পার্ক ছিল না তাদের নথি অনুযায়ী। এর পরেই গত ৩০ জানুয়ারি হাই কোর্ট প্রশাসনকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। ১২ সপ্তাহের মধ্যে হাই কোর্টকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। সন্দীপন বলেন, ‘‘এখন বাচ্চাদের খেলার জায়গা কমছে। সেখানে কেন পার্ক উঠে যাবে? তা ফেরানো হোক।’’
পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘বাম আমলে কী হয়েছে, বলতে পারব না। জায়গাটি ২০১৩ সালে পুরসভা কেনে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৬ কাঠা। কেনার সময় থেকেই কোনও পার্ক ওখানে ছিল না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পুরসভার জমি মানুষের ভালর জন্যই ব্যবহার করা হবে, এর অন্যথা হবে না। এ জন্য উন্নত মানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)