Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Virtual inauguration of Sarat Village

সাজবে শরৎ-গ্রাম, শিলান্যাস মুখ্যমন্ত্রীর

বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস অনুষ্ঠান বড় পর্দায় দেখানো হয় দেবানন্দপুরে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি-সহ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরা।

প্যারী পন্ডিতের পাঠশালা ভগ্নদশা অবস্থা। দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্র চট্ট্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান সংস্কারের পর উদ্ভোধন অনুষ্ঠান।

প্যারী পন্ডিতের পাঠশালা ভগ্নদশা অবস্থা। দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্র চট্ট্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান সংস্কারের পর উদ্ভোধন অনুষ্ঠান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেবানন্দপুর শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩১
Share: Save:

কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান হুগলির দেবানন্দপুরকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলবে রাজ্য সরকার, তিন মাস আগে এই ঘোষণা করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কাজ ঘিরেআগ্রহ তৈরি হয়েছে শরৎ-অনুরাগী এবং গ্রামবাসীদের মনে। তবে রয়েছে কিছু প্রশ্নও।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের জন্য আপাতত মিলবে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। তা দিয়ে কথাশিল্পীর বসতবাটী সংস্কার, অতিথিশালা তৈরি, শরৎচন্দ্র স্মৃতি পাঠাগারের সামনে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। পরে প্রদর্শশালা সংস্কার, চিপ (স্বল্পমূল্যে) ক্যান্টিন করা হবে।

তিন মাস আগে শরৎচন্দ্রের ১৪৮ তম জন্মদিন পেরিয়েছে। এক বছর পরে তাঁর জন্ম সার্ধ-শতবর্ষ। তার আগে সরকারের এই উদ্যোগে শরৎচন্দ্রকে নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁরা বা আশপাশের মানুষজন খুশি। তবে তাঁরা বলছেন, দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজরিত অনেক ঐতিহ্য ধ্বংসের পথে। সেগুলিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাঁচানো জরুরি। শরৎ-গ্রামে তোরণ, তিনি যে পাঠশালায় পড়তেন, ভগ্নপ্রায় সেই প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালা সংস্কারও দীর্ঘ দিনের দাবি। স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘পরিকল্পনায় সমস্ত রয়েছে। ধাপে ধাপে সবই হবে।’’

বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস অনুষ্ঠান বড় পর্দায় দেখানো হয় দেবানন্দপুরে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি-সহ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরা। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ব্যান্ডেল চার্চের ফাদার জনি। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মন্ত্রী বেচারাম মান্না, বিধায়ক অসিত, অরিন্দমগুঁইন, অসীমা পাত্র, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ছিলেন। জড়ো হয়েছিলেন গ্রামের মানুষ।

গত সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী যখন স্পেনে গিয়েছিলেন তখন দেবানন্দপুরে পর্যটন প্রকল্প ঘোষণা করে বিধায়ক অসিত জানিয়েছিলেন, পর্যটনমন্ত্রী তথা চন্দননগরের বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের নির্দেশেই তিনি ওই ঘোষণা করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পর্যটনমন্ত্রী বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন। তখন বিধায়ক জানিয়েছিলেন, প্রথম পর্যায়ে আড়াই কোটি টাকা মিলবে। শরৎচন্দ্রের জন্মভিটে, প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালা, চারটি শিবমন্দির, সেমিনার হল সংস্কার করা হবে। তাঁর স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলির সৌন্দর্যায়ন, জোড়ামন্দির সংলগ্ন মাঠে সীমানা পাঁচিল দেওয়া হবে। দু’টি তোরণ হবে। অতিথি নিবাস, ক্যান্টিন হবে।

দেবানন্দপুরের বাসিন্দা সুবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পর্যটন কেন্দ্রের আশ্বাস আগেও মিলেছিল। কাজ হয়নি। এ বার যেন হয়। সেমিনার হলের সিলিং ভেঙে গিয়েছে। মাথার টিন পচে গিয়েছে। আরও অনেক কাজ রয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গ্রন্থাগার সপ্তাহে মাত্র এক দিন খোলা হয়। নিয়মিত খোলা দরকার। এ নিয়ে গ্রন্থাগার দফতরের আধিকারিক আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক।’’ পাঠাগারের প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক শ্যামল সিংহ বলেন, ‘‘ঘোষণা যা করা হয়েছে, সেগুলি হোক।তবে শরৎ-সাহিত্যে এই গ্রামেরযে সব জায়গার উল্লেখ আছে, সেগুলি আগে সংস্কার দরকার। তোরণের কথাও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেভাবা উচিত।’’

শরতের বসতবাটীতে আজও বিদ্যুৎ নেই। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ এবং আরও দু’একটি বিষয়ে ছোটখাট সমস্যা রয়েছে। তা মিটিয়ে ওই সব কাজও করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Sarat Chandra Chattopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE