প্রতীকী ছবি।
করোনাকালে দু’তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে যক্ষ্মার পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই জগৎবল্লভপুরের করোনা সংক্রমিতদের থুথু পরীক্ষা করে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে বলে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
ওই দফতর জানিয়েছে, জগৎবল্লভপুর ব্লকের মডেলকে সামনে রেখে জেলা জুড়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই অভিযানে যে সব করোনা সংক্রমিতের বেশ কয়েকদিন ধরে কাশি হচ্ছে, তাঁদের সকলের থুথু পরীক্ষা করা হবে।
এমনিতে বছরভর জেলা জুড়ে যক্ষ্মা রোগী চিহ্নিত করার রুটিন অভিযান চলে। তাতে অনেক দিন ধরে কাশি হচ্ছে, এমন ব্যক্তিদের থুথু সংগ্রহ করে পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে জগৎবল্লভপুরে দেখা যায়, যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বেশ কমে যাচ্ছে। একটা সময়ে মাসে তিন জন করে যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান মিলতে থাকে। এত কমসংখ্যক যক্ষ্মা রোগীর চিহ্নিতকরণ হওয়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেন জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা।
এরপরেই এই ব্লকে অনেক দিন ধরে কাশি হচ্ছে এমন করোনা সংক্রমিতদের থুথু পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, করোনা এবং যক্ষ্মা— দু’টি সংক্রমণের ক্ষেত্রেই কাশি সাধারণ উপসর্গ। তিনি বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমিতদেরও যে হেতু কাশি হয়, তাই তাঁদের আর থুথু সংগ্রহ করা হয় না। তাঁদের করোনা হয়েছে ধরে নিয়ে চিকিৎসা হয়। যে হেতু যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছিল, তাই আমাদের মনে হয় করোনা সংক্রমিতদেরও থুথু পরীক্ষা করার দরকার আছে। কারণ তাঁদের মধ্যেও যক্ষ্মা রোগী থাকতে পারেন।’’
সেই পরীক্ষাতেই ডগৎবল্লভপুরে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধির বিষয়টি টের পান জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২৫ নভেম্বর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। একমাস পরে দেখা যায়, অভিযান শুরুর আগে যেখানে ওই ব্লকে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল মাসে গড়ে তিন জন, অভিযান চলাকালীন দেখা যায়, সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাসে ৯ জন করে। তাঁদের মধ্যে আছেন অনেক করোনা সংক্রমিতও। তারপরে জেলা জুড়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার ১৪টি ব্লক এবং হাওড়া ও উলুবেড়িয়া পুরসভা জুড়ে চলবে এই অভিযান। আপাতত মোট ৫ লক্ষ করোনা সংক্রমিতের থুথু পরীক্ষা করানো হবে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কাদের থুথু পরীক্ষা করানো হবে সেটাও প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কো-মর্বিডিটি আছে, এমন করোনা সংক্রমিতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ছাড়া বস্তি এবং ঘিঞ্জি এলাকার বাসিন্দা, বিড়ি-শ্রমিকদেরও থুথু পরীক্ষা করানো হবে। একইসঙ্গে জগৎবল্লভপুরেও চলবে অভিযান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy