Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গি মোকাবিলায় হাওড়ায় বৈঠক

কলকাতা ও হাওড়া মিলিয়ে শনিবার পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বেলুড়ের ছ’মাসের শিশুও রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, সব মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে ‘ডেথ অডিট’ করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৩
Share: Save:

রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে ওই রোগে মৃতের সংখ্যাও। সেই সংখ্যা শূন্যে নামানোর জন্য প্রতিটি জেলায় পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের এক কর্তার কথায়, “মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রোধে পুরসভা ও পঞ্চায়েতকে উদ্যোগী হতে হবে। আমাদের লক্ষ্য, চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে মৃত্যু ঠেকানো।”

সূত্রের খবর, কলকাতা ও হাওড়া মিলিয়ে শনিবার পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বেলুড়ের ছ’মাসের শিশুও রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, সব মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে ‘ডেথ অডিট’ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানাচ্ছেন, মেডিসিন, ট্রপিক্যাল মেডিসিন, শিশুরোগ বা জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক ও নার্সিং অফিসারদের নিয়ে গঠিত দল জেলায় গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার পরিকাঠামো, এলাইজা পদ্ধতিতে পরীক্ষা, ফিভার ক্লিনিক ঠিক চলছে কি না, তা দেখবে দল। সচেতনতার প্রচার থেকে মশার লার্ভা ধ্বংসের কর্মসূচি সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হবে। শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের পরে শনিবারই হাওড়ার জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছে যান খোদ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী-সহ অন্য আধিকারিকেরা।

জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর, হাওড়া ও বালি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক, অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা জানান, জেলার সরকারি হাসপাতালে ভর্তির পরে রোগী সঙ্কটজনক হলে ফেলে রাখা যাবে না। দ্রুত কলকাতার যে হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা থাকবে, সেখানে পাঠাতে হবে। পরে তিনি বলেন, “প্রয়োজনে রোগীকে আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। ভর্তির পরে চিকিৎসায় গাফিলতি মানা হবে না। সঙ্কটজনক হলে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে মৃত্যু ঠেকানো যায়।” চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়তে, মশার বংশবিস্তার রুখতে কী করা হচ্ছে, সেই আলোচনা হয় এ দিন।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি ৩৯৮ জন। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিঙে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে হাওড়াও। প্রথমে ডোমজুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও হাওড়া পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বালি পুর এলাকা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন হাওড়ায় ২০৯ জনের ডেঙ্গি পরীক্ষায় ৫৫ জনের পজ়িটিভ এসেছে। অর্থাৎ, পজ়িটিভিটি রেট ২৬ শতাংশ। এ দিন বালিতে তিন দফা বৈঠক করেন জেলাশাসক। বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়, চিকিৎসক, প্রাক্তন কাউন্সিলর, পুরকর্মী, রেশন দোকান ও ওষুধের দোকানের মালিক, ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা চলে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সচেতনতার লিফলেট সব স্তরে পৌঁছতে রেশন, ওষুধের দোকান থেকেও বিলি হবে।

বৈঠকে জেলাশাসক জানান, কোনও বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া গেলে তাঁকে রক্ত পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসার উপরে জোর দিতে হবে। সেই তথ্য পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরে। এ দিন বেলুড়ের ভোটবাগান এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে ছবি সংগ্রহ করা হয়। একটি বাড়ির তালা ভেঙে ঢুকে জঙ্গল সাফ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Mosquito Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE