E-Paper

ভূদেবের মৃত্যুদিনেও উঠল বসতবাড়ি সংস্কারের দাবি

সময়ের গ্রাসে চলে গিয়েছে ভূদেবের চুঁচুড়ার বসতবাড়ির অধিকাংশ। কয়েক দশক আগে সেই বাড়ির পাশে তৈরি হয়েছে অধ্যাপক জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষ বালিকা বিদ্যালয়।

সুদীপ দাস

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ০৮:৫০
HOUSE

বসতবাড়ি গিলেছে বটগাছ। ছবি: তাপস ঘোষ

শিক্ষাবিদ ও ভাষা সংস্কারক ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিন কাটল অনাড়ম্বরে। সোমবার অর্থাৎ ১৫ মে ছিল মনীষীর মৃত্যুদিবস। এ দিন বিকেলে তৃণমূলের তরফে সেখানে কোনওক্রমে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। গিয়েছিলেন বিধায়ক অসিত মজুমদার, স্থানীয় পুর প্রতিনিধি মিতা চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েক জন। এ বিষয়ে পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘জন্মদিনে নানা কর্মসূচি থাকে। তবে মৃত্যুদিনে কিছু করা হয় না।’’

সময়ের গ্রাসে চলে গিয়েছে ভূদেবের চুঁচুড়ার বসতবাড়ির অধিকাংশ। কয়েক দশক আগে সেই বাড়ির পাশে তৈরি হয়েছে অধ্যাপক জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষ বালিকা বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের গেটের সামনে রয়েছে মনীষীর মূর্তি। পাওনা বলতে সেটুকুই।

এই বেহাল বাড়ি নিয়ে আফশোসের অন্ত নেই এলাকার বাসিন্দাদের। সেটিকে সংস্কার করে সকলের জন্য খুলে দেওয়ার দাবিও উঠেছে। ইতিহাস নিয়ে চর্চা করা স্থানীয় বাসিন্দা সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনীষী ভূদেবের সঙ্গে দেখা করতে এই বাড়িতে একাধিক বার মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছেন। এমন ঐতিহাসিক ভিটেটা আর সংরক্ষণ করা গেল না!’’

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে হুগলির ডানলপ ময়দানে বিজেপির সভায় ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের নামোল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই মনীষীর জন্য তৃণমূল সরকার কিছু করেনি বলে ক্ষোভও জানিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন মনীষীর বাড়িতে দেখা মেলেনি কোনও বিজেপি নেতা-নেত্রীর। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা নেতা সুরেশ সাউ-এর দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলার পরও বাড়িটি সংস্কার করতে উদ্যোগী হয়নি তৃণমূল। আমরা ক্ষমতায় এলেই ওই বাড়ি সংস্কার করা হবে।’’

১৮২৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি উত্তর কলকাতার হরিতকি বাগানে জন্মেছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়। ১৮৪১ সালে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় এবং পরের বছর সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষাতেও সফল হন তিনি। হিন্দু কলেজে পড়াশোনার সময়ই একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে চাকরি জীবন শুরু। পরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকতা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৫০ সালে চুঁচুড়ার বড়বাজারে গঙ্গাপাড়ে একটি বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করেন তিনি। তাঁর প্রচেষ্টাতেই অবিভক্ত বাংলার বিহারে আদালতের সমস্ত কাজ পার্সি ভাষা থেকে হিন্দিতে শুরু হয়। সে সময় বাংলায় লেখা বিভিন্ন পাঠ্য পুস্তক তিনি হিন্দিতে অনুবাদ করে বিহার-ওড়িশায় প্রচলন শুরু করেন। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘হেক্টর বধ’ কাব্য উৎসর্গ করেছিলেন বন্ধু ভূদেবকে। ১৮৯৪ সালের ১৫ মে চুঁচুড়ার এই বাড়িতেই মারা যান তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chinsurah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy