Advertisement
০৩ মে ২০২৪
উৎপাদনের ঘাটতিতেই বিপত্তি, দাবি বিদ্যুৎ দফতরের
Power Cut

দফায় দফায় লোডশেডিং, নাস্তানাবুদ হলেন রোগীও

বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান় রোগীর আত্মীয়েরা।

লোডশেডিংয়ের জেরে পাখা বন্ধ। জেরবার রোগীরা। খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে।

লোডশেডিংয়ের জেরে পাখা বন্ধ। জেরবার রোগীরা। খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া, চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৯
Share: Save:

আবার সে এসেছে ফিরে।

গ্রীষ্মের দাবদাহের মধ্যে বারবার লোডশেডিংয়ে ঘুম উড়েছিল রাজ্যবাসীর। ভরা ভাদ্রেও রেহাই মিলছে না। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে দুই জেলার (হাওড়া-হুগলি) বহু এলাকায় শুরু হয় দফায় দফায় লোডশেডিং। কোথাও তার স্থায়িত্ব এক ঘণ্টা, কোথাও দু’ঘণ্টা। কিছু জায়গায় আবার লো ভোল্টেজ সমস্যা। ফলে, নাস্তানাবুদ হচ্ছেন সকলে। ভুগতে হচ্ছে গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীদেরও।

গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে অতিরিক্ত ‘লোড’কেই (চাপ) দায়ী করেছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এ বার লোডশেডিং নিয়ে হুগলি জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিয়োনাল ম্যানেজার কিঙ্কর সিংহ বলেন, “এটা কেন্দ্রীয় ভাবেই হচ্ছে। কোন ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমস্যায় জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ কম আছে।” রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার উলুবেড়িয়া ডিভিশন সূত্রেরও খবর, বিদ্যুৎ ঘাটতির জন্যই এই সমস্যা।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান় রোগীর আত্মীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, ৬০ শয্যার গ্রামীণ হাসপাতালের জন্য হটলাইন নেই, বিকল্প জেনারেটরও নেই। বারবার লোডশেডিং হওয়ায় চিকিৎসাধীন শিশু-সহ রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। খানাকুলের দু’টি বন্যাপ্রবণ ব্লকের মোট ২৪টি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের ভরসা এই হাসপাতালটিতে যাতে অবিলম্বে জেনারেটরের ব্যবস্থা হয় তা নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার রাত ৭টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অসুবিধার কথা স্বীকার করে খানাকুল-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্তকুমার মজুমদার বলেন, “হাসপাতালে যাতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে, সেই অনুযায়ী হটলাইন এবং বিশেষ শক্তিসম্পন্ন জেনারেটর চেয়ে সরকারি স্তরে আবেদন করা আছে। জেনারেটরের ব্যবস্থা হয়েছে বলে জেনেছি। সেটা কবে হাতে পাওয়া যাবে তা জানা নেই।”

মহকুমার বাকি ৫টি গ্রামীণ হাসপাতাল— খানাকুল ২ ব্লকের নতিবপুর, গোঘাট ২ ব্লকের কামারপুকুর, গোঘাট ১ ব্লকের গোঘাট, আরামবাগের দক্ষিণ নারায়ণপুর এবং পুরশুড়ার আঁকড়ি-শ্রীরামপুরেও প্রয়োজনীয় শক্তির জেনারেটর নেই বলে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।

শুক্রবার দুপুর ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত টানা লোডশেডিং থাকায় গোঘাট ২ ব্লকের কামারপুকুর
গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীদের আত্মীয়েরা ক্ষোভ জানান। তাঁদেরই একজনের কথায়, ‘‘শুক্রবার
দুপুরে আমার স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। কিন্তু পরে দিন বদল করা হয়।
এ দিন অস্ত্রোপচারের সময় লোডশেডিং হলে কী হত! ভাবলেই আঁতকে উঠছি।’’

খানাকুলের ঘোষপুরের পিলখাঁ, আরামবাগের হাসপাতাল রোড, পুরশুড়ার সোদপুরের ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখান।

লাগাতার এই লোডশেডিং নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনাল ম্যানেজার শুভায়ন ঘোষ বলেন, “স্থানীয় কোনও সমস্যা নেই। উপর থেকেই বন্ধ করার (শাট ডাউন) নির্দেশিকা পাই আমরা। নির্দিষ্ট কারণও বলতে পারব না। গ্রাহকদের আগাম জানানোরও সময় থাকে না।”

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ চুঁচুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। আলো ফিরতে সময় লাগে প্রায় দু'ঘণ্টা। আবার রাত দু’টো নাগাদও একই ঘটনা। শুক্রবার দুপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বাদ পড়েনি বলাগড়, পান্ডুয়া, শেওড়াফুলি, চন্দননগরও।

বৃহস্পতিবার রাত ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের জেরে জেরবার হন বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, জয়পুর-সহ উলুবেড়িয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE