Advertisement
০১ মে ২০২৪
Price Hike

আদা ৪০০ টাকা, শসা ৯০ আনাজের দামে নাভিশ্বাস

হুগলিতে প্রচুর আনাজ ফলে। এই জেলায় দামের বহর? আদার কেজি ৪০০ টাকা। ঝিঙে, পটল, বেগুনের মতো রোজের পাতে দেওয়ার আনাজের দাম চড়ে ৮০ থেকে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। শসা বিকোচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে।

An image of Ginger

আদার দাম আগুন ছোঁয়া। পান্ডুয়া হাটে। —নিজস্ব চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৯:১৬
Share: Save:

শুধু টোম্যাটো নয়, গত কয়েক দিনে লাফিয়ে বেড়েছে অন্যান্য আনাজের দামও। তার জেরে বাজারে গিয়ে ব্যাজার মুখে বাড়ি ফিরছেন সাধারণ মানুষ।

হুগলিতে প্রচুর আনাজ ফলে। এই জেলায় দামের বহর?

আদার কেজি ৪০০ টাকা। ঝিঙে, পটল, বেগুনের মতো রোজের পাতে দেওয়ার আনাজের দাম চড়ে ৮০ থেকে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। শসা বিকোচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। দোকানিরা বলছেন, মধ্য আষাঢ়ে এই সব আনাজের দর ২৫-৩০ টাকার মধ্যে থাকে। চন্দ্রমুখী আলু বুধবার ২৮-৩০ টাকা কেজি নিয়েছেন বিক্রেতারা।

কেন এই পরিস্থিতি?

চাষিদের ব্যাখা, দক্ষিণবঙ্গে দিন কয়েক ধরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তার আগে প্রকৃতি এমন প্রসন্ন ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে গিয়েছে তীব্র দাবদাহ। অসহ্য গরম। বাতাসে তীব্র আর্দ্রতা। আনাজ চাষে সেচের জল অত্যন্ত জরুরি। মাচার ঝিঙে, পটল, শসায় ভাল পরিমাণ জল লাগে। কিন্তু এ বার প্রকৃতির বিরূপতায় মাটির নীচের জলস্তর হু-হু করে নেমেছে। বিকল্প হিসেবে সাধারণত চাষিরা দূরবর্তী নদী বা বড় পুকুর থেকে সেচের জলের ব্যবস্থা করে থাকেন অন্যান্য বার। কিন্তু গত কয়েক মাসে বৃষ্টির অভাবে জলের সেই সব উৎসের হালও করুণ। তার জেরে জমির ফসল জমিতেই শুকিয়েছে। হলুদ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে বাজারে আনাজের জোগানে টান পড়েছে। দাম বাড়ছে হু-হু করে।

হুগলির তারকেশ্বর, নালিকুল, সিঙ্গুর, ধনেখালিতে প্রচুর আনাজ হয়। কিন্তু, এ বার উৎপাদন অনেক কম। তারকেশ্বরের চাষি অনুপ ঘোষ বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন বৃষ্টি নেমেছে ঠিকই। কিন্তু তার আগে প্রকৃতির রূপ অন্য ছিল। খুব গরম গিয়েছে। মাচার আনাজ জল পায়নি।’’ তবে, আকাশের দিকে তাকিয়ে অভিজ্ঞ চাষি আশা দেখছেন। তাঁর মনে হচ্ছে, ‘‘এখন বৃষ্টি নেমে গিয়েছে। বাজারের পরিস্থিতি টানা এই রকম থাকবে না। দাম কমবে।’’

আদার দাম ৪০০ টাকা হওয়ার কারণ হিসাবে নদিয়ার কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিশেষজ্ঞ জানান, আদা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সামান্য চাষ হয়। তাও বাণিজ্যিক ভাবে নয়। আদার চাষ মূলত উত্তরবঙ্গে। সিকিম, মণিপুর থেকেও এ রাজ্যে প্রচুর আদা আসে। তাঁর কথায়, ‘‘সম্ভবত রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে পরিবহণে সমস্যা থাকায় আদার জোগানে সমস্যা আছে। জোগানের সঙ্গে চাহিদার সমতা রক্ষিত না হওয়ায় দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে।’’

তবে, আলুর দাম বাড়ার নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই বলে সাফ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা। তাঁরা জানান, বাজারে আলুর জোগানের ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা নেই। রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন বাজারে সব আনাজের দাম চড়া। এই সুযোগে ফড়েরা কৌশলে আলুর দামও বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।’’ তিনি জানান, বুধবার আড়তে প্রতি প্যাকেট (৫০ কেজি) চন্দ্রমুখী আলুর দাম ছিল ৯০০ টাকা। জ্যোতি ৭৩০ টাকা। এ ক্ষেত্রে বাজারে চন্দ্রমুখী ২৪-২৫ জ্যোতি ২০-২১ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE