Advertisement
০৪ মে ২০২৪
FirhadHakim

পোড়া বস্তির জমিতেই ঘর, মিলবে ১৫ হাজার টাকাও

মন্ত্রীর ঘোষণায় আশ্বস্ত হলেও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বামফ্রন্ট আমলে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বস্তির বাসিন্দাদের জন্য যে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছিল, সেই ফ্ল্যাট তাঁদের না দিয়ে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Firhad Hakim

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৫৪
Share: Save:

হাওড়ার ইছাপুরে আগুনে ভস্মীভূত বস্তির জমিতেই পুনর্বাসন দেওয়া হবে ঘর হারানো ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার ওই পোড়া বস্তি পরিদর্শনে যান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হাওড়া পুরসভা তাঁদের নতুন ঘর তৈরি করে দেবে। এ ছাড়া, পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে। মন্ত্রীর ঘোষণায় আশ্বস্ত হলেও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বামফ্রন্ট আমলে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বস্তির বাসিন্দাদের জন্য যে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছিল, সেই ফ্ল্যাট তাঁদের না দিয়ে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ফ্ল্যাট ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

এ দিন দুপুরে ইছাপুর দক্ষিণপাড়ার সর্বহারা বস্তি পরিদর্শনে যান পুরমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, জেলাশাসক পি দীপপ প্রিয়া, নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী এবং পুর কমিশনার ধবল জৈন। পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি। ক্ষতিগ্রস্ত বস্তির বাসিন্দাদের জন্য সব রকম ব্যবস্থা করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আমি হাওড়া পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছি, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ওই জায়গাতেই ৪০টি পাকা ঘর এবং শৌচাগার তৈরি করে দিতে। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরে ফিরহাদ জানান, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে। এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলে নতুন পাসবই বার করে দেবেন। কারণ, অধিকাংশ বাসিন্দারই ব্যাঙ্কের পাসবই পুড়ে গিয়েছে।

পুরমন্ত্রী আরও জানান, এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড ফের যাতে না ঘটে, তার জন্য ইট-বালি-সিমেন্ট, লোহার রড ও টিন দিয়ে একেবারে পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। এত দিন সেখানে বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে ঘেরা ঝুপড়ি ছিল। তার মধ্যেই বিপজ্জনক ভাবে রান্নাবান্না হত। পাকা ঘর তৈরি হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা ইছাপুরের স্থানীয় স্কুলে থাকবেন। জেলা প্রশাসনই তাঁদের খাবার-সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেবে।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছেন হাওড়া পুরসভার সাফাইকর্মীরা। পাশে ভিড় করেছেন বস্তির বাসিন্দারা। সেখানে দাঁড়িয়েই অনিন্দিতা প্রামাণিক, মায়া মালিক, সমর দাসেরা জানান, বাম আমলে হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের ওই জমি দখলমুক্ত করতে বস্তির কাছেই ইন্দিরা আবাস যোজনায় তাঁদের জন্য ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও সেই ফ্ল্যাট তাঁরা পাননি। অনিন্দিতাদের অভিযোগ, তাঁদের না দিয়ে বাইরের লোকজনকে সেই সমস্ত ফ্ল্যাটে ঢোকানো হয়েছিল। বস্তির মাত্র কয়েক জন বাসিন্দা ঘর পেয়েছিলেন। আর সেই কারণেই প্রতি বর্ষায় কোমরজলে ডুবে থাকতে হয় তাঁদের। বাসিন্দাদের দাবি, ফ্ল্যাটে তাঁদের থাকার সুযোগ করে দেওয়া হোক।

এই প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও কানে এসেছে। বিস্তারিত খোঁজ করা হয়ে ওঠেনি। ঠিক কী ঘটেছিল, তা জেনে তবেই ব্যবস্থা নিতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FirhadHakim Fire Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE