স্থায়ীকরণ, বোনাস বাড়ানো-সহ কিছু দাবিতে চার দিন ধরে কাজ বন্ধ রেখে বিজেপির নেতৃত্বে আন্দোলন করছিলেন উত্তরপাড়া পুরসভার ঠিকাদারের অধীনে থাকা সাফাইকর্মীরা। শুক্রবার সেই আন্দোলনকে ঘিরে অশান্তি ছড়াল কোতরংয়ে জিটি রোডে পুরসভার একটি ভবনের সামনে। সেখানে জড়ো হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হতেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে মারধরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
জেলা বিজেপির সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান পিনাকী ধামালি এবং দলীয় দুই কাউন্সিলরের নেতৃত্বেই হামলা হয়। তিন সাফাইকর্মী আহত হন এবং তাঁদের দলের দুই কর্মীকে হেনস্থা করা দাবি করে তিনি বলেন, “সাফাইকর্মীদের স্থা্য়ী করা দূরস্থান, চুক্তি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এর জবাব দেওয়ার পরিবর্তে পিনাকীবাবুরা হামলা করল।”
অভিযোগ উড়িয়ে পিনাকীবাবুর দাবি, “আমি ওখানে যাইনি। কাউকে মারধরও করা হয়নি। কিছু সাফাইকর্মী কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। বিজেপির লোকজন বাধা দেয়। তা নিয়েই দু’পক্ষের বচসা হয়।”
কয়েক বছর ধরে ঠিকাদারের অধীনে শ’খানেক সাফাইকর্মী উত্তরপাড়া পুর এলাকায় কাজ করছেন। স্থায়ীকরণ-সহ বিভিন্ন দাবিতে আগে তাঁরা একাধিকবার কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান, স্মারকলিপিও দেন পুর কর্তৃপক্ষকে। গত সোমবার থেকে তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেন। এই কর্মবিরতির জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ। শহর অপরিচ্ছন্নও হচ্ছে। অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুরসভা জানিয়েছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষ সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই করেননি। ঠিকাদারের সঙ্গে পুরসভার চুক্তি মোতাবেক টাকা তাঁদের দেওয়া হয় না। পুজো-বোনাসও দেওয়া হয় নামমাত্র। মাঝেমধ্যেই তাঁদের বসিয়ে অন্য লোক দিয়ে কাজ করানো হয়। ফলে, তাঁদের রুজি-রুটিতে টান পড়ছে। এ দিন ওই সাফাইকর্মী এবং বিজেপির কিছু কর্মী-সমর্থক ক্রাউন বাজার এবং কোতরংয়ে পুরসভার দফতরের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। তার পরেই ওই গোলমাল।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সাফাইকর্মীরা পুরসভার নয়, ঠিকাদারের লোক। বোনাস নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে ওঁদের বিবাদ হয়েছিল। মিটেও গিয়েছে। ওঁদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে পুরসভার কিছু করার নেই।
পুরসভার জনস্বাস্থ্য ও পরিষেবা বিভাগের চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল দিলীপ যাদব বেলেন, “ওদের (বিজেপি) দলের প্রধানমন্ত্রী যখন নিজে ঝাড়ু হাতে নামতে চাইছেন অপরিচ্ছন্নতা দূর করতে, তখন এখানকার বিজেপির লোকজন উল্টো পথে হেঁটে শহরকে অপরিষ্কার করার বন্দোবস্ত করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy