ধূমধাম: চন্দননগরে রথযাত্রা। ছবি: তাপস ঘোষ
২৫ বছর বন্ধ থাকার পরে ফের রথযাত্রা শুরু হল হাওড়ার বাগনানের দেউলগ্রামে। আনন্দে মেতে উঠলেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ১১৫ বছর আগে স্থানীয় চন্দ্র পরিবারের সদস্যরা ওই রথটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মূলত শ্যামাচরণ চন্দ্র, বাবুলাল চন্দ্র এবং দুর্গাচরণ চন্দ্র—এই তিন জনের চেষ্টায় তৈরি হয়েছিল কাঠের রথ এবং রথ রাখার জন্য খড়ের চালা। শুধু রথযাত্রা উৎসব শুরু করা নয়, দেউলগ্রাম বাজারটির মালিকও ছিল ওই পরিবার। প্রতি বছর রথের মেলা উপলক্ষে জমজমাট থাকত সেই বাজার। কিন্তু আস্তে আস্তে রথটির অবস্থা ক্রমে সঙ্গীন হয়ে যায়। চন্দ্র পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল না। তাই রথযাত্রাটি বন্ধ হয়ে যায়।
রথযাত্রা বন্ধ হলেও নিয়মিত মেলা বসতো। বছর কয়েক আগে গ্রামবাসীরা চন্দ্র পরিবারের সদস্যদের রথ মেরামতির জন্য অনুরোধ করেন। পরিবারের প্রবীণ সদস্য অরুণ চন্দ্র বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা বার বার রথ মেরামত করতে অনুরোধ করেছিলেন। তারপর আমরা ঠিক করি গ্রামের ঐতিহ্য রক্ষা করতেই হবে। আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র আমাদের পাশে থেকেছেন।’’ অসিতবাবুর কথায়, ‘‘চন্দ্র পরিবারটি নিজেদের যেভাবে জমি বিক্রি করে পুরনো ঐতিহ্য রক্ষা করলো সেটি শিক্ষনীয়।’’
নতুন রথটি তৈরি হয়েছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে। চন্দ্র পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রথ সারাতে তাঁরা যৌথ মালিকানায় থাকা জমি বিক্রি করেছেন। পারিবারিক পুকুর লিজ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে লিজ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন রথ তৈরির জন্য উদয়নারায়ণপুর থেকে ছুতোর মিস্ত্রিদের নিয়ে আসা হয়। প্রায় ৬ মাস ধরে কাজ করেন তাঁরা। রথ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে শাল ও নিম কাঠ। সব মিলিয়ে খরচ হয় ৬ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা।
শনিবার রথযাত্রার দিনে নতুন রথটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ নতুন রথটি টানা শুরু হয়। পুরনো রথের কাঠামোটি বিসর্জন দেওয়া হয় রূপনারায়ণ নদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy